সন্ধ্যা হলেই মোটরবাইকের দাপাদাপি, আলো-আঁধারি গলিতে নেশার ঠেক নিয়ে অভিযোগ ছিল। সঙ্গে দিনের বেলাতেও ব্যাঙ্ক, এটিএম থেকে টাকা তুলে বেরনোর পরে লুঠের মতো ঘটনা ঘটছিল পরপর। অপরাধ প্রবণতা কমাতে এবং বাসিন্দাদেল নিরাপত্তার স্বার্থে এ বার গোটা শহরকে ক্লোজড্ সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) দিয়ে মুড়ে ফেলতে চলেছে কালনা পুরসভা।
শহরের ৬ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে মোট ৮৪টি সিসিটিভি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়াও চারটি হাইমাস্ট এবং ২০০টি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন এলইডি আলো লাগানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগের দাবি, পুরো কাজের জন্য গ্রিন সিটি প্রকল্পে ৩ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা খরচ করা হবে। কালনার এসডিপিও প্রিয়ব্রত রায়ও বলেন, ‘‘সিসিটিভি থাকলে অপরাধ প্রবণতা কমবে। বেপরোয়া মোটরবাইক খোঁজা বা কোন এলাকায় নেশার ঠেক বসছে তার ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে।’’
সন্ধ্যা হলেই শহরে বেপরোয়া মোটরবাইকের দৌরাত্ম্য ছিল। একাধিকবার মদ্যপ যুবকদের মোটরবাইকের ধাক্কায় দুর্ঘটনাও ঘটেছে। সন্ধ্যার পরে শহরের বেশ কিছু রাস্তা দিয়ে চলাফেরা মুশকিল হয়ে পড়েছে বলেও একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছেন বাসিন্দারা। এ ছাড়াও ব্যাঙ্ক বা এটিএম থেকে টাকা তুলে বেরনোর পরে পরপর দুষ্কৃতীদের কবলে পড়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দিনের আলোয় মোটরবাইক নিয়ে এসে রাস্তা রুখে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। আবার সন্ধ্যায় বেশ কিছু রাস্তায় আলো কম থাকায় মেয়েদের ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ।
বাসিন্দাদের নিরাপত্তার স্বার্থে বছর দেড়েক আগে কালনা পুরসভা শাহু সরকার মোড়, বৈদ্যপুর মোড়-সহ কয়েকটি জায়গায় ১৬টি সিসিটিভি বসিয়েছিল। ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারির দায়িত্ব ছিল কালনা থানার। তবে এ বার আরও আরও বড় এলাকা জুড়ে সিসিটিভি বসানোর উদ্যোগ হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল, বাজার, জনবহুল এলাকায় বসবে সিসিটিভি। নজরদারির জন্য ২৪ ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোল রুমও খোলা হচ্ছে। একই সঙ্গে যে সমস্ত অলিগলিতে আলোর স্বল্পতা রয়েছে সেখানে যাতে অসামাজিক কাজ কর্ম না হয় তার জন্য লাগানো হবে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন এলইডি আলো।
পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘খুব দ্রুত কাজ শুরু করছি। শহর জুড়ে নজরদারি শুরু হলে বেপোরোয়া গাড়ির চালকদের চিহ্নিত করা সহজ হবে। কমে যাবে অন্য দুষ্কর্মও।’’ এ ছাড়াও শহর সাজাতে তিনটি ইকো পার্ক, রাস্তা চওড়া করার পরিকল্পনা হয়েছে। খরচ ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘আশা করছি দ্রুত অনুমোদন মিলবে।’’