প্রতীকী চিত্র।
‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে যে সমস্ত চাষির নাম রয়েছে, তাঁরা সহজেই সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির জন্য নাম নথিভুক্ত করতে পারছেন। অথচ, পূর্ব বর্ধমান জেলার ৫৫ শতাংশ চাষিরই এখনও নাম নেই ওই প্রকল্পে। যদিও কৃষি দফতরের দাবি, চাষিদের মধ্যে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে।
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর সহায়ক মূল্যে ধান কেনার জন্য এক লক্ষ ৩৮ হাজার নাম নথিভুক্ত হয়েছিল। এ বার এখনও পর্যন্ত ৬৪ হাজার চাষি ‘রেজিস্ট্রেশন’ করিয়েছেন। আধিকারিকদের দাবি, যাঁরা কৃষকবন্ধু প্রকল্পের আওতাধীন, তাঁদের তথ্য ‘পোর্টাল’-এ রয়েছে। ফলে, ভোটার কার্ডের প্রতিলিপি দিলেই যাচাই করে নেওয়া যাচ্ছে সমস্ত তথ্য। নাম নথিভুক্ত অনেক সহজে করা যাচ্ছে। যদিও খাদ্য নিয়ামক আবির বালি জানান, যাঁদের নাম ওই প্রকল্পে তাঁরা জমির নথি, মৌজার নাম-সহ বেশ কিছু তথ্য দিয়ে ‘অ্যানেক্সার ১’ ফর্ম পূরণ করলে ধান বিক্রির সুবিধে পাবেন। ভাগচাষিদের ক্ষেত্রে ‘অ্যানেক্সার ২’ ফর্ম পূরণ করতে হবে। তাঁর দাবি, ‘‘এখনও পর্যন্ত জেলায় কৃষকবন্ধু প্রকল্পে ৫৫ শতাংশ চাষির নাম নথিভুক্ত হয়েছে। জেলাশাসকের চেষ্টায় সংখ্যাটি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।’’
নাম নথিভুক্ত করায় অনীহা কেন?
কৃষি দফতরের দাবি, জেলার বহু চাষির জমির দলিল রয়েছে। অথচ নিজের নামে পরচা নেই। ফলে চাইলেও প্রকল্পের আওতায় আসতে পারছেন না তাঁরা। আবার চাষিদের একাংশের দাবি, গ্রামে শিবির করে বিষয়টি নিয়ে জানানো হয়নি যথাযথ ভাবে। ফলে, কী সুবিধে মেলে, সে সুবিধে তথা নথিভুক্তি করাতে গেলে কী করতে হয় তা নিয়ে অনেকেরই ধোঁয়াশা রয়েছে।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানে চাষির সংখ্যা ৪ লক্ষ ৫৫ হাজারের আশাপাশে। তাঁদের মধ্যে ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত হয়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ চাষির। কৃষি দফতরের দাবি, চাষযোগ্য জমির পরচা থাকলেই এতে আবেদন করা যায়। এতে খরিফ ও রবি মরসুমে চাষিরা আর্থিক সহায়তা পান। বছরে দু’বার সর্বোচ্চ আড়াই হাজার এবং সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা করে পেতে পারেন এক জন চাষি। এর সঙ্গেই প্রকল্পে নাম থাকা কোনও চাষির মৃত্যু হলে দু’লক্ষ টাকা সরকারি সাহায্য পেতে পারে ওই পরিবার।
ওই দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এক শ্রেণির চাষিদের প্রকল্পে নাম লেখানোয় অনীহা রয়েছে। আবার অনেকের নিজের নামে জমি না থাকায় প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারছেন না।’’ তবে জেলা জুড়ে এ নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে, দাবি তাঁর।