চুল দানের কর্মসূচি। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।
একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে ক্যানসার রোগীদের জন্য রবিবার দুর্গাপুরে প্রায় ৩০ জন চুল দান করলেন। তাঁদের কেউ জন্মদিন উপলক্ষে এ কাজ করেছেন। কেউ বা মানুষের পাশে দাঁড়াবেন বলেই এই পদক্ষেপ করেন। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিৎ জানা জানান, এই চুল দিয়ে ‘পরচুলা’ তৈরি করে ক্যানসার রোগীদের বিনামূল্যে দিয়ে থাকেন তাঁরা।
সংস্থাটির সদর কার্যালয় পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে। রবিবার মূলত আসানসোল-দুর্গাপুর এলাকার চুলদানে ইচ্ছুক মানুষের জন্য সিটি সেন্টারে শিবিরটি আয়োজিত হয়। কেন এমন উদ্যোগ? সংস্থাটির সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যানসার চিকিৎসায় অনেক সময়েই রোগীর কেমোথেরাপির পরে মাথার চুল উঠে যায়। অনেকেই চুল না থাকায় মানসিক ভাবে বিধ্বস্থ হয়ে পড়েন। আবার অনেকে আর্থিক কারণে মাথায় পরচুলা বসাতে পারেন না। এই রোগীদের জন্য তাঁদের সংস্থাটি বিনামূল্যে পরচুলার ব্যবস্থা করে বলে জানান বিশ্বজিৎ।
এ দিন চুল দান করেন সুদেষ্ণা চক্রবর্তী। সামাজিক মাধ্যমে সংস্থার ‘পেজে’ চুলদানের কথা জানতে পেরে যোগাযোগ করেন। তিনি বলেন, “আমার জন্মদিন উপলক্ষে ক্যানসার রোগীদের জন্য চুল দান করেছি। আমি এ কাজ করতে পেরে খুব খুশি।” চুল দান করে কলেজ ছাত্রী শ্রেয়সী শীট বলেন, “চুল দান করব বলেই চুল লম্বা করেছিলাম। এর পরে দিদির কাছ থেকে এই শিবিরের খবর পেয়ে যোগাযোগ করি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে। মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছে থেকেই আমার এমন কাজ।” চুল দান করে একই কথা জানান দুর্গাপুরের অর্ঘ্য বণিক, কলকাতার নিরুপম কুন্ডুরা।
ওই সংস্থাটির দাবি, যাঁদের লম্বা চুল রয়েছে, তাঁরা তা কেটে ছোট করার সময় না ফেলে দিয়ে যদি দান করেন, তাহলে সেই চুল নেওয়ার ব্যবস্থা করে তারা। বিশ্বজিৎ জানান, চুল সংগ্রহের পরে তা পাঠানো হয় কেরলের একটি সংস্থায়। সেই সংস্থা পরচুলা তৈরি করে। প্রতিটি পরচুলার জন্য খরচ হয়, গড়ে প্রায় তিন হাজার টাকা। সে টাকা তাঁদের সংস্থাই দিয়ে থাকে বলে দাবি করেন বিশ্বজিৎ। তিনি বলেন, “পরচুলা হাতে আসার পরে আমরা তা ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের হাতে তুলে দিই। কখনও সরাসরি রোগীরা যোগাযোগ করেন। কখনও রোগীর আত্মীয়রা আবার কখনও বা অতীতে চুল দান করেছেন, তেমন কারও মাধ্যমে রোগীদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়।”