জেলা জুড়ে বিপদ রাস্তায়

পরীক্ষার্থী-সহ তিন জন জখম, মৃত দুই

দুর্ঘটনা দেখেই ছুটে আসেন লোকজন। রাস্তায় পুলিশের টহলদার একটি গাড়িও দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। সরাফত ও শাহনওয়াজকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে এবং শরৎচন্দ্রবাবুকে বার্নপুরের ইস্কো হাসপাতালে পাঠানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল ও জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯ ০১:৪৬
Share:

জামুড়িয়ার সাতগ্রাম ফটকে। নিজস্ব চিত্র

দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দু’জন প্রবীণের। জখম হয়েছেন এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী-সহ মোট তিন জন। শনিবার দুর্ঘটনা দু’টি ঘটেছে হিরাপুর থানার বার্নপুর ইস্কো কারখানা রোডে এবং ২ নম্বর জাতীয় সড়কে জামুড়িয়ার সাতগ্রাম ফটকের কাছে।
পুলিশ জানায়, এ দিন সকালে ভাইয়ের সঙ্গে মোটরবাইকে চড়ে হিরাপুরের মানিক চাঁদ স্কুলে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলেন বার্নপুরের রহমতনগরের বাসিন্দা সরাফত খান। বার্নপুরের বয়েজ স্কুল লাগোয়া ইস্কো রোডে একটি স্কুটির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে সরাফতদের মোটরবাইকটির। সরাফত ও তাঁর ভাই শাহনওয়াজ খান বেশ কিছুটা দূরে ছিটকে পড়েন। রাস্তায় ছিটকে পড়েন স্কুটির চালক, শরৎচন্দ্র চৌধুরীও (৭০)। শরৎচন্দ্রবাবু বার্নপুরের রামবাঁধের বাসিন্দা।
দুর্ঘটনা দেখেই ছুটে আসেন লোকজন। রাস্তায় পুলিশের টহলদার একটি গাড়িও দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। সরাফত ও শাহনওয়াজকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে এবং শরৎচন্দ্রবাবুকে বার্নপুরের ইস্কো হাসপাতালে পাঠানো হয়। জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সরাফতের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালেই মৃত্যু হয় শরৎচন্দ্রবাবুর।
জেলা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাজীব মুখোপাধ্যায় জানান, সরাফত খান রহমতনগর উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র। শনিবার রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরীক্ষা ছিল। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পর্ষদের প্রতিনিধিরা আসানসোল জেলা হাসপাতালে পৌঁছন।
দুর্ঘটনার পরে এলাকাবাসীর কাছ থেকে পুলিশ জেনেছে, মোটরবাইকটি চালাচ্ছিলেন শাহনওয়াজ। সে রহমতনগর উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। শনিবার তারও স্কুলের পরীক্ষা ছিল। দাদাকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিয়ে তারও স্কুলের পরীক্ষা দিতে যাওয়ার কথা। এলাকাবাসীর দাবি, মোটরবাইকটি অত্যন্ত দ্রুত চালানো হচ্ছিল। কিন্তু পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রায় তিন কিলোমিটার আগেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনাগ্রস্তদের কারও মাথায় হেলমেট ছিল না।
এ দিনই দুপুরে জামুড়িয়ার বেড়েলা গ্রামের বাসিন্দা দেবীদাস চট্টোপাধ্যায় (৬৪) নিজেই স্কুটি চালিয়ে, লাগোয়া বেনালি গ্রামের লক্ষ্মণ চন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে রানিগঞ্জ যাচ্ছিলেন। আচমকা, একটি গাড়ি স্কুটির পিছনে ধাক্কা মারলে দু’জনেই ছিটকে পড়েন রাস্তায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দেবীদাসবাবুর। জখম লক্ষ্মণবাবুকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
দুর্ঘটনার খবর চাউর হতেই এলাকাবাসী পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁরা জানান, এই এলাকাটি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে। রাস্তার অদূরে মঙ্গল ও শনিবার হাট বসে। ওই দু’দিনই বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে। এই এলাকায় ট্র্যাফিক ব্যবস্থা জোরদার করা, ট্র্যাফিককর্মী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। জামুড়িয়া থানার পুলিশ জানায়, আপাতত হাটবারের দু’টি দিন ট্র্যাফিককর্মী মোতায়েন করা হবে। তারপরে নিয়মিত ট্র্যাফিককর্মী মোতায়েন করা হবে। পুলিশের আশ্বাস পেয়ে প্রায় আধ ঘণ্টা পরে অবরোধ ওঠে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement