জামুড়িয়া হোক বা আউশগ্রাম— জেলা জুড়েই ভোট পরবর্তী হিংসা থামার নাম নেই। মঙ্গলবারও ফের রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠল মঙ্গলকোটের কুলসোনা গ্রামে। সিপিএমের অভিযোগ, তাঁদের দুই কর্মী তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন। দু’জনকেই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে কুলসোনা দিঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা, পেশায় জেলা পরিষদের কর্মী রফিকুল হাসান শেখ নামে এক ব্যক্তি প্রতি দিনের মতো মোটরবাইকে চড়ে অফিস যাচ্ছিলেন। অন্য দিকে মাঠ থেকে চাষের কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন ইসমাইল শেখ নামে আরও এক গ্রামবাসী। দু’জনেরই বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, আচমকা স্থানীয় তৃণমূল নেতা নাজির শেখের নেতৃত্বে ছ’জন দুষ্কৃতী লাঠি, শাবল নিয়ে চড়াও হয় রফিকুল ও ইসমাইলের উপরে। পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলার জেরে ডান পা, মুখ ও মাথায় আঘাত পান রফিকুল। দু’জনকেই জখম অবস্থায় উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে রফিকুলকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়।
রফিকুলের স্ত্রী আরেফা বিবির অভিযোগ, ‘‘স্বামী সিপিআইএম করেন। ভোটের পর থেকে উনি বাড়ি ছাড়া। কাটোয়া থেকেই অফিস করছেন। দু’দিনের জন্য বাড়ি ফিরেছিলেন। তার পরেই এই হামলা।’’ পরিবারের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন বলে জানান আরেফা। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, জখম দু’জনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বাধা দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার পরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালানোর অভিযোগ করেছে সিপিএম। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাধনা মল্লিক বলেন, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে ওই এলাকায় আমাদের কর্মীরা নিরাপত্তার অভাবে থানা পর্যন্ত যেতে পারছেন না। পুলিশের উচিত আক্রান্তদের বাড়ি গিয়ে অভিযোগ নেওয়া।’’ যদিও মঙ্গলকোট থানার ওসি পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘কোনও অভিযোগ এলে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। এলাকায় মোবাইল ভ্যান টহল দিচ্ছে।’’ এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করে তৃণমূলের মঙ্গলকোটের ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী বলেন, ‘‘দলের নির্দেশ কোনও কর্মী যেন এমন ঘটনায় যুক্ত না থাকে। কেউ যুক্ত থাকলে থাকলে প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’