—প্রতীকী ছবি।
পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের বিষ্ণুপুর গ্রামে সিপিএম কর্মী শেখ রাজিবুলের খুনের ঘটনায় আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম নাজির মোল্লা এবং জয়নাল আবেদিন। দু’জনেরই বাড়ি বিষ্ণুপুর গ্রামে। শনিবার রাতে সেখান থেকেই তাঁদের ধরা হয়েছে। এই নিয়ে বিষ্ণুপুর গ্রামে সিপিএম কর্মী খুনের ঘটনায় মোট চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তবে নিহতের পরিবার পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, এই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আবদুল লালন-সহ জড়িতদের কয়েক জন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু শাসকদলের নেতৃত্বস্থানীয় বলে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছে না। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের খোঁজেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
ভোটের আগের দিন বিকেলে আউশগ্রামের অমরপুর অঞ্চলের বিষ্ণুপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্রের চত্বরে সিপিএম ও তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে। ওই সংঘর্ষে জখম হন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তথা অমরপুর গ্রামপঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান এবাদত শেখ, সিপিএমের প্রার্থী সাদেক আলি-সহ উভয় পক্ষের পাঁচ জন। তাদের মধ্যে শেখ রাজিবুল (৩৬) নামে ওই সিপিএম কর্মীর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগলে তাঁকে প্রথমে বননবগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শেখ রাজিবুলকে কলকাতায় নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ভোটের দিন সকালে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় নিহতের ভাই শেখ আজাহারউদ্দিন আউশগ্রাম থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। তিনি পুলিশকে জানান, বিষ্ণুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে ভোটকর্মীরা আসার পর তাঁদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক ভাবে দেখা করে ভোটকেন্দ্র থেকে বেড়িয়ে আসার সময় রাস্তায় সিপিএমের কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়। শেখ আজাহারউদ্দিনের অভিযোগ, গেঁড়াই গ্রামের বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা আবদুল লালন, অমরপুর পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান এবাদত শেখ, অমরপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি গোলাম মোল্লার নেতৃত্বে তৃণমূলের লোকজন লাঠিসোঁটা, র়ড, শাবল নিয়ে চড়াও হন। রাজিবুলের মাথায় লোহার রড ও শাবল দিয়ে আঘাত করা হয়। তার ফলেই রাজিবুল শেখের মৃত্যু হয়।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতে আউশগ্রাম থানার পুলিশ প্রথমে অভিযুক্তদের মধ্যে জালালউদ্দিন মোল্লা ও শেখ আবুল হোসেনকে গত সপ্তাহে গ্রেফতার করে। তারপর ফের দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত নাজির মোল্লা ও জয়নাল আবেদিনকে রবিবার বর্ধমান আদালতে পাঠানো হয়। পুলিশ ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছে। বিচারক তাঁদের পাঁচ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।