ডিএসপি-র নগর প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রাক্তন কর্মীদের কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র
কোয়ার্টার লিজ়ের দাবিতে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) প্রাক্তন কর্মীদের নগর প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি রবিবার বারো দিনে পড়ল। তাঁদের অভিযোগ, গ্রাচ্যুইটির টাকা আটকে রয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে। এর বিনিময়ে তাঁরা ডিএসপি-র কোয়ার্টারে রয়েছেন। দ্রুত কোয়ার্টার লিজ়ের দাবিতে তাঁরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করছেন। এ বার ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে অবস্থান।
টাউনশিপে মোট কোয়ার্টারের সংখ্যা ১৯ হাজারের বেশি। সংস্থার প্রাক্তন শ্রমিক-কর্মীদের নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কোয়ার্টারের লিজ় বা লাইসেন্স দেওয়া হয়। ১৯৯৯ ও ২০০৮-এ মোট ২,৮৯৬টি কোয়ার্টার প্রাক্তন কর্মীদের দেওয়া হয়। শেষ বার ২০১৫ সালে কোয়ার্টার লাইসেন্স দেওয়া হয়। সে বার ৯১৩টি কোয়ার্টার বিলি করা হয়েছিল। এর বাইরে বর্তমানে প্রায় এক হাজার কোয়ার্টারে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা সপরিবার বসবাস করেন।
অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের সংগঠনের অভিযোগ, ডিএসপি কর্তৃপক্ষ গ্রাচ্যুইটির টাকা আটকে রাখায় ওই এক হাজার প্রাক্তন কর্মী সমস্যায় পড়েছেন। অথচ, তাঁদের কোয়ার্টার লিজ় দেওয়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন না কর্তৃপক্ষ। ওই প্রাক্তন কর্মীরা জানান, তাঁরা ডিএসপি-র শ্রমিক হিসেবে দীর্ঘদিন কোয়ার্টারে থেকেছেন। কিন্তু লিজ় বা লাইসেন্স না পাওয়ায় বাড়ি ছাড়া হওয়ার আতঙ্ক রয়েছে। প্রদীপকুমার দত্ত অবসর নিয়েছেন ২০১৩-য়, দেবদত্ত রায় ২০১৪-য়, কেদারনাথ নন্দ ২০১১ সালে। এ দিন অবস্থান মঞ্চ থেকে তাঁরা বললেন, ‘‘এমন অনিশ্চয়তা ভাল লাগে না। কোয়ার্টার লিজ় পেলে গ্রাচ্যুইটির টাকাফেরত পাব। কিছুই হচ্ছে না।’’ সংগঠনের সভাপতি বিষ্ণুদেও সিংহ বলেন, ‘‘দাবি না মেটা পর্যন্ত টানা আন্দোলন চলবে।’’ আন্দোলনকারীরা জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি অবস্থান মঞ্চ থেকে বাড়ি ফিরে মারা যান ২০১৪-য় অবসর নেওয়া অশোক অ্যাভনিউয়ের বাসিন্দা শিবেন চক্রবর্তী। বিষ্ণুদেওবাবু সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি, মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরেই এই মৃত্যু।
সিটু, আইএনটিইউসি, আইএনটিটিইউসি, বিএমএস, এইচএমএস-সহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলিও এই দাবিগুলি নিয়ে লাগাতার আন্দোলন করছে। ইতিমধ্যেই আইএনটিটিইউসি নেতা জয়ন্ত রক্ষিত, বিএমএস নেতা অরূপ রায় অবস্থান মঞ্চে গিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। রবিবার বক্তব্য রাখেন সিটু নেতা তথা দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, ডিএসপি কর্তৃপক্ষ কোয়ার্টার লিজ় দেওয়ার বিষয়ে বৈঠক করেছেন। কিন্তু নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি। ডিএসপি আধিকারিকেরা অবশ্য জানান, ‘সেল’-এর নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে কারখানা।