প্রতীকী ছবি।
পশ্চিম বর্ধমান জেলায় করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের ঘরে পৌঁছল।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত রানিগঞ্জের দু’টি ওয়ার্ডে ‘লকডাউন’ ও জেলাজুড়ে বারোটি এলাকাকে গণ্ডিবদ্ধ করা হয়েছিল। তার পরে রানিগঞ্জেই সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় দেড়শো ছুঁয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১ জুলাই জেলার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৭০৬, ৭২৯, ৭৫৮, ৭৮৬, ৮০৮ ও ৮৯৬। ১ অগস্ট সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯৮২। এই দিনেই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৬ জন। সোমবার রাতে প্রকাশিত বুলেটিনে সেই সংখ্যা হাজার ছাড়িেয় গিয়েছে। মোট আক্রান্ত ১,০৬২। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ জন।
লাফিয়ে সংক্রমণ বাড়ার কারণ কী? নতুন করে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন?
আইএমএ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের কোভিড ম্যানেজমেন্টে তাদের সংগঠনকে যুক্ত করা হয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে এই কমিটিতে কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে আছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সমরেন্দ্রকুমার বসু। রাজ্য জুড়ে যে ভাবে কোভিড ছড়িয়েছে তাতে নাগরিক সচেতনতার অভাব স্পষ্ট, বলে মনে করছেন সমরেন্দ্রবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘যে কোনও নতুন রোগ সংক্রমিত হতে শুরু করলে তা ধীরে ধীরে তুঙ্গে ওঠে। তার পরে ক্রমশ তা নিম্নমুখী হয়। পশ্চিম বর্ধমানে কিছুটা দেরিতে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। এতে প্রশাসন যথাযথ নজরদারির চেষ্টা করেছে বলাই যায়। তবে আরও কঠোর হাতে মোকাবিলা করতে হবে।’’
সমরেন্দ্রবাবু জানান, দুই জেলায় কোভিড ম্যানেজমেন্টে তিনি-সহ আট জন চিকিৎসক আছেন। দুই জেলার কোভিড-হাসপাতাল, ‘সেফ হোম’, নিভৃতবাস কেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করে রিপোর্ট রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে তাঁদের। আজ, মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান ও বৃহস্পতিবার পশ্চিম বর্ধমানে কোভিড হাসপাতালগুলি নিরীক্ষণ করবেন তাঁরা। এর পরে একে একে ‘সেফ হোম’-সহ অন্য কেন্দ্রগুলি ঘুরবেন। কী অবস্থায় এগুলি রয়েছে, কোন ঘাটতি আছে কি না, কী করণীয় সে সব রিপোর্ট পাঠাবেন।
নাগরিক সচেতনতা প্রসঙ্গে রানিগঞ্জের চিকিৎসক দিব্যেন্দু দাস বলেন, ‘‘নাগরিকদের একাংশ ‘মাস্ক’ পরার বিধি মানছেন না। অনেকে ‘মাস্ক’ ঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করছেন না। থুতনি বা গলায় ঝুলিয়ে রাখছেন। এতে সংক্রমণ বাড়বে।’’ এ দিকে জেলাশাসক ( পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘সংক্রমণ রোধে প্রতিটি প্রাথমিক ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে লালারস নেওয়া হবে। প্রতিদিন হাজারের বেশি মানুষের র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এ ভাবে যে সমস্ত এলাকা করোনামুক্ত রয়েছে সেই সব এলাকায় যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, তার ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি, সংক্রমিত এলাকায় সংক্রমণের নিরিখে গণ্ডিবদ্ধ জ়োনের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।’’ তিনি জানান, এর সঙ্গে বিধি না মানার জেরে মামলা করা থেকে শুরু করে সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত প্রচার চালাচ্ছে প্রশাসন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)