কেতুগ্রাম-পালিটা রোডে জমে জল। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।
জল নামছে ধীর গতিতে। ফলে, পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমায় অজয়ের জল ঢুকে যাওয়া নানা এলাকার পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন হয়নি বলে দাবি এলাকাবাসীর। অজয় নদের জমা জলে ভেসে থাকা বিদ্যুৎবাহী তারের সংস্পর্শে এসে কাটোয়ার আঙ্গারপুর গ্রামে শনিবার এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রায় তিন দিন ধরে জল জমে থাকায় এ দিন বেশ কিছু মাটির বাড়ির দেওয়ালও ধসে পড়ে। অনেকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। প্লাবিত এলাকার রাস্তাগুলিতে জল কিছুটা কমলেও, নানা জায়গার যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও বিচ্ছিন্ন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে কাপড় মিলতে গিয়ে জমা জলে ভেসে থাকা বিদ্যুৎবাহী তারে হাত পড়ে যায় কাটোয়ার আঙ্গারপুর গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় দিনমজুর বানু দাসের (৪২)। মৃত্যু হয় তাঁর। দেহ কাটোয়া হাসপাতালে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়। আচমকা জল ঢুকে যাওয়ায় মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামের বহু মুরগি খামার জলে ডুবে গিয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, হাজার সাতেক মুরগি মারা গিয়েছে। জমা জল থেকে মৃত মুরগি সরাতে না পারায় দূষণ ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলকোটের বকুলিয়া, ইছাবটগ্রাম, পালিশগ্রাম, মাজিগ্রাম, মঙ্গলকোট, নতুনহাট-সহ নানা গ্রাম শনিবারও জলমগ্ন ছিল। কেতুগ্রামের চরখি, বিল্বেশ্বর, রসুই, তেওড়া, সীতাহাটি-সহ বিভিন্ন গ্রামে জল ঢুকে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ইছাবটগ্রামের বাসিন্দা সিদ্ধার্থ মণ্ডলের দাবি, ‘‘গ্রামে পাঁচটি মুরগি খামার রয়েছে। আচমকা জল ঢুকে যাওয়ায় আমরা কেউই মুরগি বার করতে পারিনি। খামারের মাথার উপর দিয়ে জল বইতে থাকায় সাত-আট হাজার মুরগি মারা গিয়েছে। লক্ষ-লক্ষ টাকা ক্ষতি। কী ভাবে সামাল দেব, জানি না!’’ রসুই গ্রামের বাসিন্দা তপন রায় বলেন, ‘‘কেতুগ্রামের চার জায়গায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় রসুই, খেয়াইবান্দরা, তেওড়া ও বিল্বেশ্বরের চার দিকে জল জমে রয়েছে। বাইরের সঙ্গে পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।’’
মহকুমাশাসক (কাটোয়া) জামিল ফতেমা জেবা বলেন, ‘‘মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামে জল জমার পরিস্থিতির ধীরে-ধীরে উন্নতি হচ্ছে। বহু মানুষ ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। তাঁদের জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি।’’