—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ারুল আজিম খুনের মূল চক্রী আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিন আমেরিকার নাগরিক। সন্দেহ করা হচ্ছে এখন সেখানেই গা-ঢাকা দিয়েছে আজিমের বাল্যবন্ধু, অভিযুক্ত শাহিন। এই কারণে বাংলাদেশ চাইছে, ভারতের সঙ্গে আমেরিকার যে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে, তা কাজে লাগাক ভারত। ভারত শাহিনকে হাতে পেলে তদন্তের কাজ সম্পূর্ণ হবে। সাংসদ খুনে সুবিচার মিলবে বলে মনে করছে ঢাকা। বাংলাদেশের গোয়েন্দা পুলিশের সূত্রে সেই ইঙ্গিত মিলেছে।
আজিম খুনের তদন্তে সদ্য কলকাতা ঘুরে গিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দারা। এ বার ঢাকার গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে চার সদস্যের দল নেপালে যাচ্ছে। আজিম খুনের অন্যতম অভিযুক্ত সিয়াম নেপালে আত্মগোপন করেছে বলে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের সন্দেহ। একটি সূত্রের খবর, নেপালের পুলিশ সিয়ামকে আটক করে রেখেছে। হারুন যাচ্ছেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে। নেপালে গিয়ে মূল চক্রী শাহিনের বিষয়েও কিছু সূত্র মিলতে পারে বলে মনে করছে ঢাকা। কিছু তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারীদের ধারণা, মূল চক্রী শাহিনও নেপাল হয়েই আমেরিকায় গিয়েছে।
এই খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ শিমূল ওরফে আমানুল্লা আমান, শিলাস্তি রহমান-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। ভারতে সিআইডি-র হাতে ধরা পড়েছে কসাই জিহাদ হাওলাদার। অভিযোগ, আজিমকে খুনের পরে জিহাদই সাংসদের দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে হাড়, মাংস আলাদা করে ফেলে। এই খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত শাহিন, সিয়াম- সহ বেশ কয়েক জন পলাতক। তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন ১৩ মে আজিমকে খুনের পরে ১৪ মে সিয়াম সড়কপথে বিহারের মুজফফরপুর হয়ে নেপাল চলে যায়।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কিছু সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, নেপালে সিয়ামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে শনিবার এই ব্যাপারে রশিদ বলেন, “এই বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারব না। আমরা তদন্ত করতে যাচ্ছি। নেপাল রুট ব্যবহার করেছিল আজিম হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্তরা। ভারতে জিহাদের সঙ্গেও এই ব্যাপারে কথা বলা হয়েছে।” রশিদ আরও জানান, আজিম খুনে অভিযুক্তরা-সহ বাংলাদেশের বেশ কয়েক জন বড় অপরাধী ইদানীং এই প্রতিবেশী দেশের ‘রুট’ ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, “এই বিষয়ে ইন্টারপোলকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে।”
নিউ টাউনের ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাঙ্কে উদ্ধার মাংসপিণ্ড মানুষের দেহাংশ কি না তা চলতি সপ্তাহেই ফরেন্সিক রিপোর্টে পরিষ্কার হবে বলে আশা করছে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। আজিমের কন্যারও কলকাতায় আসার কথা। তিনি এলে উদ্ধার হওয়া মাংসপিণ্ডের ডিএনএ মেলানো হতে পারে। তবে নিহত বাংলাদেশি সাংসদের খুলি ও হাড়ের খোঁজে তল্লাশি চলছে। জিহাদকে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, আজিমের দেহ টুকরো টুকরো করে প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে বাগজোলা খালপাড়ে ফেলা হয়েছিল। তবে অনেক তল্লাশি চালিয়েও সেখানে কিছু মেলেনি। সেই কাজে ভারতীয় নৌসেনা ও উপকূল রক্ষী বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করেছে সিআইডি।