শিক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারির মুখে খোলা বহু স্কুল, হাজিরা কম

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এ দিন কোন স্কুলের কী হাল ছিল, সেই বিষয়ে ডিআই বা স্কুল পরিদর্শকদের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোথাও কোনও স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছিল কি না, তার সবিস্তার উল্লেখ থাকতে হবে ডিআই-দের রিপোর্টে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৯
Share:

উপস্থিত: সল্টলেকের একটি স্কুলে ছুটির পরে। বুধবার। ছবি: শৌভিক দে।

রাজ্যে বিজেপির ডাকা বন্‌ধের দিনে সব স্কুল খোলা রাখতে হবে এবং খোলা না-রাখলে ভুগতে হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মঙ্গলবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। বুধবার রাজ্যের অধিকাংশ স্কুল খোলাই ছিল। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা তেমন আসেনি। এ দিন পঠনপাঠন বিঘ্নিত হয়েছে বলেই শিক্ষা শিবিরের পর্যবেক্ষণ।

Advertisement

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এ দিন কোন স্কুলের কী হাল ছিল, সেই বিষয়ে ডিআই বা স্কুল পরিদর্শকদের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোথাও কোনও স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছিল কি না, তার সবিস্তার উল্লেখ থাকতে হবে ডিআই-দের রিপোর্টে।

যাদবপুর বিদ্যাপীঠে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৬০০। কিন্তু এ দিন প্রায় ৫০ শতাংশই গরহাজির। তাই কোনও কোনও শ্রেণির দু’টি বিভাগকে একসঙ্গে বসিয়ে ক্লাস করানো হয়েছে। কোনও রাজনৈতিক দলের ডাকা বন্‌ধেই স্কুলের বাস চালানো হয় না। এ দিনও হয়নি। তাই অনেক পড়ুয়াই আসতে পারেনি। যারা এসেছিল, তাদের অনেককেই বাড়ি ফেরার পথে ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে। উত্তর কলকাতার সরস্বতী বালিকা বিদ্যালয়ে বেলা ২টোয় ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। স্কুলের বাস বা পুলকার না-থাকায় বাড়ি ফিরতে অসুবিধায় পড়ে সেখানকার অনেক ছাত্রী। ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলে অন্যান্য দিনের তুলনায় এ দিন হাজিরা ছিল বেশ কম। জুনিয়র বিভাগে প্রায় অর্ধেকই গরহাজির। তবে স্কুল-কর্তৃপক্ষের দাবি, পুলকার কম তো ছিলই। তার উপরে ২৪ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তাই এমনিতেই পড়ুয়া কম।

Advertisement

মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি এ দিন বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে ইতিমধ্যেই খবর পৌঁছে গিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতরের কাছে। ওই স্কুলের অধ্যক্ষা অঞ্জনা সাহার কাছে ফোনে জানতে চাওয়া হয়, স্কুল বন্ধ ছিল কি না। তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’ ডিপিএস রুবি পার্ক প্রথমে জুনিয়র বিভাগ বন্ধ রাখার কথা বললেও পরে সেখানকার কর্তৃপক্ষ অবস্থান বদলে ফেলেন। এ দিন ওই স্কুলের জুনিয়র বিভাগ খোলাই ছিল। অশোক হল গ্রুপের স্কুলের পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল আগেই। এ দিন সেই সিদ্ধান্তেই অনড় ছিলেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ। পুলকার না-থাকায় পড়ুয়ার উপস্থিতি কম ছিল অভিনব ভারতী স্কুলেও। সল্টলেকের ভারতীয় বিদ্যাভবন স্কুল খোলা ছিল। তবে আগেই বিঞ্জপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছিল, এ দিন সিনিয়র বিভাগে ক্লাস বন্ধ রাখা হবে। জুনিয়র বিভাগে এ দিন খুব কম পড়ুয়া আসায় ওই বিভাগেও কোনও ক্লাস হয়নি বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষা রেখা বৈশ্য।

পুলকার কোথায়? পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সুকান্ত বসু জানান, পুলিশ বহু পুলকার তুলে নিয়েছে। তা ছাড়া অধিকাংশ অভিভাবকই এ দিন ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাননি। সেই জন্যই কলকাতার রাস্তায় পুলকারের সংখ্যা কম ছিল।

অভিযোগ, হাওড়ার একটি কলেজের পড়ুয়াদের ফোন করে ক্লাসে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন সেখানকার ‘দিদিরা’। এ দিন কলেজে না-এলে কলেজ থেকে নাম কেটে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। সকালে এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় পড়ুয়া ও শিক্ষক ভর্তি ডিপিএস মেগাসিটি স্কুলের একটি বাসের উপরে হামলা হয়। সাউথ পয়েন্ট কর্তৃপক্ষ জুনিয়র ও সিনিয়র বিভাগের অভিভাবকদের জানিয়েছিলেন, স্কুল খোলা থাকবে। তবে অভিভাবকেরা যেন পরিস্থিতি বুঝে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠান। এ দিন ওই স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল অনেকটাই কম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement