সপরিবারে বন্ধুপ্রকাশ।
ভুয়ো লগ্নি সংস্থার পাশাপাশি সৌভিক বণিকের সঙ্গে পানীয় জলের বটলিং প্লান্টের ব্যবসা শুরু করার তোড়জোড় শুরু করেছিলেন জিয়াগঞ্জে নিহত শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল। তদন্তে নেমে এমনই তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের। এ ব্যাপারে সাহাপুরের বেশ কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে কথাও হয়েছিল বন্ধুপ্রকাশের। তাঁদের ওই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত করতে চেয়েছিলেন তিনি। লাভের ‘প্রলোভন’ দেখিয়ে অনেকের কাছেই অনুরোধ করেছিলেন তাঁর সঙ্গে বটলিং প্লান্টের ব্যবসায় টাকা ঢালতে। কিন্তু কেউই তেমনআগ্রহ দেখাননি।
সাগরদিঘির রতনপুরের জোতকমলে বছর চারেক আগে চালু হয় ওই বটলিং প্লান্ট। স্থানীয় এক বাসিন্দা নিজের বাড়িতেই চালু করেন সেটি। কিন্তু সে ভাবে বাজার ধরতে পারেনি। সাগরদিঘি পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য বলছেন, “এক সময় লোক নিয়োগের নামে টাকা তুলতে থাকে প্লান্টের মালিক। কিন্তু টাকা দিয়েও চাকরি না পাওয়ায় এ নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়ায়। আমাদের কাছেও অভিযোগ আসে। আমরা হস্তক্ষেপ করি। তার একটি গাড়িও আটকে দেওয়া হয়। তখন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় ওই প্লান্ট মালিক।’’
এই সময় প্লান্টটি বিক্রির কথাবার্তাও শুরু হয়। তখনই সৌভিকের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটে বটলিং প্লান্টের মালিকের। অংশিদার করার শর্তে তিন কোটি টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্লান্ট মালিককে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কাছেও নিয়ে যান সৌভিক। এ জন্য দফায় দফায় প্রায় ১২ লক্ষ টাকা নিয়েছিল সৌভিক বলে অভিযোগ। কিন্তু ঋণ পাইয়ে দিতে না পেরে নিজেই সেই প্লান্ট কিনে নেওয়ার অছিলায় ফের বন্ধুপ্রকাশের কাছ থেকে মোটা টাকা হাতায় সৌভিক। কিন্তু প্লান্টটি শেষ পর্যন্ত হাতে না পাওয়ায় টাকা আদায়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন বন্ধুপ্রকাশ।
শুক্রবার রাতে ওই প্লান্টের মালিককে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় পুলিশ। জিয়াগঞ্জ থানায় জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে সমস্ত কথাই জানিয়েছেন তিনি। এমনকি সৌভিকের সামনে বসেও সব কথা বলেন। শনিবার রাতেই তাকে অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বন্ধুপ্রকাশের পরিবারের কেউই অবশ্য এই নয়া ব্যবসার কথা জানেন না। সাহাপুরে বন্ধুপ্রকাশের পরিচিতদের দাবি, এর পরেই তার সঙ্গে সৌভিকের সম্পর্কে চিড় ধরতে থাকে।