দাম্পত্য সমস্যার জন্য ফের বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুষলেন রত্না।
শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, মমতাই নাকি তাঁকে বলেছিলেন রত্নাকে ডিভোর্স দিতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিজের মোবাইলে ‘মা’ বলে সেভ করে রাখতেন শোভন। সেই মা এখন অনেক ‘পাল্টে’ গিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। কলকাতা পুরসভার মেয়রের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত মমতার স্নেহের ‘কানন’ এখন পদ্ম শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শোভনের ‘বিপদের বন্ধু’ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মমতা থেকে শুরু করে বৈশাখীর সঙ্গে সম্পর্ক, এমনকি নিজেদের বিবাহবিচ্ছেদ— আনন্দবাজারকে বললেন রত্না চট্টোপাধ্যায়।
প্রশ্ন: শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বদলে গিয়েছেন...
রত্না: অন্যায় করলে শাসন তো করবেনই। যা খুশি করে বেড়াবে, শপিংমল-হোটেলে ঘুরবে, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে খুল্লামখুল্লা প্রেম করবে! মমতাদি শাসন করছিলেন বলেই শোভনবাবু বিজেপিতে চলে গিয়েছেন। ওখানে হয়তো এ সব করলে কিছু বলবে না।
প্রশ্ন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নাকি শোভনকে বলেছিলেন, আপনাকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য?
আরও পড়ুন: শোভন-বৈশাখীকে ভাত-ডালের সঙ্গে তুলনা দিলীপের, কে ভাত, কে ডাল, পাল্টা প্রশ্ন বৈশাখীর
রত্না: কোনও দিনই না। হতেই পারে না। মিথ্যে কথা বলছেন। বৈশাখীর পরামর্শে আমাকে ডিভোর্স নোটিস পাঠান শোভনবাবু। তখন আমাকে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছিল, দু’জন মিউচুয়াল ডিভোর্স করে নিলে ইডি-সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচা যাবে। পরে শোভন চট্টোপাধ্যায় আমাকে বলেন, সব মিটে গেলে ফের রেজিস্ট্রি করে নেব। এখন বলছেন, মমতাদি ডিভোর্স দিতে বলেছেন! মমতাদির নামে মিথ্যে কথা বলছেন। আমার নামে মিথ্যে কথা বলছেন। বিজেপি থেকে বেরিয়ে গেলে আবার দিলীপ ঘোষ, জয়প্রকাশ মজুমদারের নামেও মিথ্যে কথা বলবেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।
প্রশ্ন: যখন আপনাকে ইডি তলব করছে, তখন তো আপনি লন্ডন চলে গিয়েছেন?
রত্না: আমি তো বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে লন্ডন গিয়েছিলাম। আমি সেখান থেকে বার বার ফিরে আসতে চাইছি, কিন্তু শোভনবাবু আমাকে বারণ করছিলেন। ইডি ডাকার পরেও আমাকে থেকে যেতে বলা হয়। সেই সময়ে আমাকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। ডিভোর্সের নোটিসও তখন পাঠানো হয়। কিন্তু আমার বাবা আমাকে বলে, তোকে ইডি ডাকছে। তুই না যদি না আসিস, এখানে ফিরলেই কিন্তু ওরা তোকে গ্রেফতার করবে। সেই সময় ভাগ্যিস আমি বাবার কথা শুনেছিলাম।
আরও পড়ুন: বিরোধীদের উপর এমন সংগঠিত সন্ত্রাস আগে দেখিনি, ফের তোপ শোভনের
প্রশ্ন: শোভন চট্টোপাধ্যায় কেন দল ছাড়লেন? তৃণমূলের সঙ্গে কী নিয়ে মনোমালিন্য?
রত্না: সেটা আমি কী করে বলব! শোভনবাবুই বলতে পারবেন। তবে এটুকু বলতে পারি, এতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও হাত নেই। বৈশাখীর জন্যই শোভনবাবুকে দল ছাড়তে হয়েছে। মমতাদি বাংলার জন্যে যা করেছেন, তা অন্য কোথাও হয়নি। এটা ওর বোঝা উচিত ছিল। ‘মা’ বলে মোবাইলে মমতার নাম সেভ করে রাখতেন শোভনবাবু। কী এমন বলেছেন যে, দল ছেড়ে মমতাদির নামে মিথ্যা কথা বলতে হল?
প্রশ্ন: বৈশাখী-শোভনকে ভাত-ডালের সঙ্গে তুলনা করেছেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আপনি কিসের সঙ্গে তুলনা করবেন?
রত্না: তাই নাকি! শুনিনি তো। আমি তো ওদের পোলাও-মাংসের সঙ্গে তুলনা করব। পোলাও-মাংস একসঙ্গে খেতে ভালই লাগে (হাসি)। তবে এটা মজার বিষয় নয়। এখনও শোভন চট্টোপাধ্যায় আমার স্বামী। দিলীপদা এ সব বলেছেন? সত্যি? কী বাজে ব্যাপার!