শ্যাম সেল কাণ্ড

আত্মসমর্পণের পর জামিন পেতেই মালা ২ নেতাকে

অভিযোগ দায়ের হওয়ার এক সপ্তাহ পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন শ্যাম সেল কাণ্ডে অভিযুক্ত দুই তৃণমূল নেতা অলোক দাস ও চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার আসানসোল আদালত দেড় হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে। প্রাণনাশের হুমকি ও অন্যায় সুবিধা আদায়ে অভিযুক্ত জামুড়িয়ার এই দুই নেতা জামিন পাওয়ার পরেই তাঁদের মালা পরিয়ে, স্লোগান দিয়ে আদালত চত্বর থেকে নিয়ে যান অনুগামীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৪ ০৩:২৫
Share:

আসানসোল আদালত থেকে বেরোচ্ছেন অলোক দাস ও চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: শৈলেন সরকার

অভিযোগ দায়ের হওয়ার এক সপ্তাহ পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন শ্যাম সেল কাণ্ডে অভিযুক্ত দুই তৃণমূল নেতা অলোক দাস ও চঞ্চল বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার আসানসোল আদালত দেড় হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে। প্রাণনাশের হুমকি ও অন্যায় সুবিধা আদায়ে অভিযুক্ত জামুড়িয়ার এই দুই নেতা জামিন পাওয়ার পরেই তাঁদের মালা পরিয়ে, স্লোগান দিয়ে আদালত চত্বর থেকে নিয়ে যান অনুগামীরা।

Advertisement

শ্যাম সেল-কাণ্ডকে ‘ছোট ঘটনা’ আখ্যা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অলোকবাবুরা আত্মসমর্পণ করায় সেই মন্তব্য উল্লেখ করে বিঁধতে ছাড়েননি বিরোধীরা। আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের কথায়, “ছোট ঘটনা হলে ওঁদের আত্মসমর্পণ করতে হল কেন?” আসানসোলের সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীর অভিযোগ, “মুখ্যমন্ত্রী সব কিছুকে ‘ছোট ঘটনা’ বলে প্রশাসনের উপরে চাপ সৃষ্টি করেন। তাই পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে পারে না।”

গত ১৬ জুলাই জামুড়িয়ায় শ্যাম গোষ্ঠীর কারখানা কর্তৃপক্ষ অলোকবাবুদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন। কিন্তু তাতে নির্দিষ্ট তথ্য নেই জানিয়ে এফআইআর দায়ের করেনি পুলিশ। শেষে ২১ জুলাই কারখানা কর্তৃপক্ষ ফের বিশদ অভিযোগপত্র জমা দেন। তার ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে চারটি ধারায় মামলা রুজু হয়, সব ক’টিই জামিনযোগ্য। তার পরে অলোকবাবুদের এক বার থানায় ডেকে জেরা করেছে পুলিশ।

Advertisement

এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ গাড়িতে চড়ে আদালতে পৌঁছন অলোকবাবুরা। তার কিছু ক্ষণ পরে জামুড়িয়া থেকে মিনিবাসে চড়ে পৌঁছে যান তাঁদের বহু অনুগামী। সরকারি আইনজীবী সুস্মিতা সেন চক্রবর্তী জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় অভিযোগ ছিল। তাই তিনি জামিনের বিরোধিতা করেননি। বিকেল সওয়া ৩ টে নাগাদ জামিন পেয়ে অলোকবাবু ও চঞ্চলবাবু বাইরে বেরোতেই তাঁদের গলায় মালা পরিয়ে দেন অনুগামীরা। সঙ্গে চলে হর্ষধ্বনি ও স্লোগান। হঠাৎ এই চিৎকার-চেঁচামেচিতে হকচকিয়ে যান আদালতে কাজে আসা লোকজন, আইনজীবীরা। গাড়িতে ওঠার সময়ে অলোকবাবুর দাবি, “আমাদের বিরুদ্ধে কারখানা কর্তৃপক্ষ মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।” চঞ্চলবাবু অবশ্য কোনও মন্তব্য করেননি।

তবে জামিন পাওয়ার পরে দুই নেতাকে নিয়ে কিছু কর্মীর এই উচ্ছ্বাসের নিন্দা করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের কার্যকরী সভাপতি তথা শ্যাম সেল-কাণ্ডে দলের তরফে তদন্তের ভারপ্রাপ্ত ভি শিবদাসন বলেন, “ওই ঘটনায় আমরা অভিযুক্ত দুই নেতাকে সাসপেন্ড করেছি। তাঁদের জামিন নেওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সে জন্য তাঁদের গলায় মালা পরানোর কী দরকার ছিল, তা জানি না। কারা এ সব করেছেন, খোঁজ নিয়ে দেখব।”

বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে তাঁর বক্তব্য, “পুলিশ-প্রশাসনের কাজে আমাদের দল যে হস্তক্ষেপ করে না, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।” কারখানা কর্তৃপক্ষ গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement