ছবি: সংগৃহীত।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে আন্দোলন-বিক্ষোভের মধ্যেই বিতর্ক বাধল ফেসবুকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের একটি মন্তব্য ঘিরে। তাঁর মন্তব্যের জন্য ধর্মীয় পরিচয়ে মুসলিম এক ব্যক্তিকে ফেসবুকেই দেশছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন বাবুল। যার জেরে সমালোচনার পাশাপাশিই প্রশ্ন উঠেছে, কেন্দ্রীয় শাসকদের ‘মনের কথা’ই কি প্রকাশ্যে এনে ফেলেছেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের স্বর্ণপদক জয়ী ছাত্রী দেবস্মিতা চৌধুরী সমাবর্তন-মঞ্চেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিলিপি ছিঁড়ে ফেলে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সেই ঘটনার পক্ষে-বিপক্ষে ফেসবুকে বিতর্ক চলছিল। ঘটনার সূত্রপাত সেখান থেকেই। ওই ছাত্রীর আচরণ ও তাঁর বাবা-মায়ের মনোভাবের নিন্দা করে এক ব্যক্তি যে পোস্ট করেছিলেন, তাকেই শেয়ার করেছিলেন বাবুল। তার জন্য এক ব্যক্তি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের শিক্ষা-দীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ওই ব্যক্তির মুসলিম নাম দেখেই বাবুল মন্তব্য করেন, ‘আগে তোমায় তোমার দেশে ফেরত পাঠাই, তার পরে পোস্ট-কার্ডে জবাব দেব।’
নাম দেখেই কাউকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে ধরে নিয়ে এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এ ভাবে ‘দেশে ফেরত পাঠানো’র হুমকি দেওয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে। অনেকেই বাবুলকে ‘এ দেশের কলঙ্ক’ বলেছেন, ‘ওঁকে দেশের মন্ত্রী বলতে লজ্জা লাগে’ বলে মন্তব্য করেছেন। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিজেপি এই রকমই! ওদের অন্তরাত্মার কথা বাবুল সামনে এনে ফেলেছেন।’’
আরও পড়ুন: ফের শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা আজ থেকে
খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও দাবি করেছেন, কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য সংশোধিত আইন নয়। অথচ বাবুল ফেসবুকে শুধু নাম দেখেই দেশছাড়া করার হুমকি দেওয়ার পরে বিতর্কের মুখে পড়ে আবার ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘‘বুঝতে পারছি, লোকেরা আমার অসম্মান করছে। আমাকে নিয়ে কু-মন্তব্য করছেন। কাউকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমার নেই। কিন্তু সামাজিক মাধ্যম কী ভাবে তার গরিমা হারাচ্ছে, তা দেখে অবাক লাগে!’’