Recruitment Scam

অয়নের ‘নিয়োগ দুর্নীতি চক্রে’ জড়িত বিজেপি নেতা! হয় ভুয়ো ইন্টারভিউ, দাবি পাণ্ডুয়ার বধূর

‘স্পেশাল ২৬’ সিনেমায় ভুয়ো ইন্টারভিউ নেওয়ার পর সিবিআই তল্লাশির নামে গয়না হাতিয়ে চম্পট অক্ষয় কুমার, অনুপম খেররা। লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েও চাকরি পাননি বলে দাবি পাণ্ডুয়ার এক বধূর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাণ্ডুয়া শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩ ১৯:৩৮
Share:

সিনেমা ‘স্পেশাল ২৬’ যেন বাস্তবে। দাবি নাসিরা খাতুন নামে পাণ্ডুয়ার এক বধূর। ছবি: সংগৃহীত।

চাকরির খোঁজে গিয়ে ‘ভুয়ো’ ইন্টারভিউ দিতে হয়েছিল। খানিকটা অক্ষয় কুমারের সিনেমা ‘স্পেশাল ২৬’-এর মতোই। তবে ওই বলিউডি সিনেমায় ভুয়ো ইন্টারভিউ নেওয়ার পর সিবিআই তল্লাশির নামে লক্ষ লক্ষ টাকার গয়না হাতিয়ে চম্পট দিয়েছিলেন অক্ষয় কুমার, অনুপম খেররা। এ ক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েও চাকরি পাননি বলে দাবি নাসিরা খাতুন নামে পাণ্ডুয়ার এক বধূর। তাঁর অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত হুগলির প্রোমোটার অয়ন শীলের ‘চক্রে’ নয়া চরিত্র হলেন শেখ আব্বাস আলি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আব্বাস। উল্টে তাঁর দাবি, অয়নের হয়ে টাকা তুলেছেন শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি।

Advertisement

নাসিরার দাবি, অয়ন শীলের ‘নিয়োগ দুর্নীতি চক্রে’র অঙ্গ হিসাবে ভুয়ো ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল তাঁদের মতো বহু চাকরিপ্রার্থীর। এতে জড়িত রয়েছেন পাণ্ডুয়ায় শিক্ষক তথা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করা নেতা শেখ আব্বাস আলি। তিনিই এই নিয়োগ দুর্নীতি চক্রের নতুন চরিত্র বলে দাবি নাসিরার।

স্থানীয় সূত্রে খবর, পাণ্ডুয়ার দাবরা হাই মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন আব্বাস। ২০১৫ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও পেয়েছিলেন। পরে পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্যও হন। এক সময় সে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন।

Advertisement

নাসিরার দাবি, স্কুলে চাকরির জন্য ২০১৫ সালে আব্বাসকে ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। এমনকি, তাঁর মতো আরও অনেকে আব্বাসকে টাকা দেন। টেট পরীক্ষা দেওয়ার পর বিকাশ ভবনে তাঁদের নিয়ে গিয়ে ইন্টারভিউও নেওয়া হয়। নাসিরা বলেন, ‘‘বিকাশ ভবনের পিছন দিকে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে গাড়িতে বার বার ৮ জন করে তুলে বিকাশ ভবনের দোতলায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে ডায়েরিতে আমাদের নাম ও ফোন নম্বর লিখে নেন এক ব্যক্তি। তবে সেখানেই ইন্টারভিউ শেষ!’’ নাসিরার অভিযোগ, ওই ‘ভুয়ো’ ইন্টারভিউয়ের পর চাকরি হয়নি তাঁদের কারও। চাকরি না হওয়ায় আব্বাস আলির থেকে টাকা ফেরত চাইলে অয়নের নাম করেন আব্বাস। নাসিরার আর দাবি, ‘‘অয়ন শীলের ফ্ল্যাটেও গিয়েছিলাম আমরা। সেখানে আমাদের একটি কাগজ বার করে দেখিয়ে বলেন, ‘লিস্টে যাঁদের নাম নেই, তাঁদের চাকরি হবে না।’’

নাসিরার আরও দাবি, প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে আব্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা কয়েক জন। বিষয়টি পুলিশেও জানানো হয়েছিল। তবে তাতে লাভ হয়নি।নাসিরার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আব্বাস। অয়নের সঙ্গে তাঁর বিষেশ পরিচয় নেই বলে দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েতে চাকরি করতেন অয়ন শীল। সেখানে যাতায়াত থাকায় আমি ওঁকে চিনতাম।’’ পরে ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূল সদস্যও হন আব্বাস। ২০২১ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। সে সময় থেকে তাঁর অনেক শত্রু বলে দাবি করেছেন আব্বাস। তাঁর দাবি, ‘‘আমি তৃণমূলে ছিলাম। দল ছাড়ার পর থেকে আমার মেরে ফেলার চেষ্টাও হয়েছিল।’’ তাঁর আরও দাবি, কারও থেকে টাকা নেননি তিনি। তবে অয়নের হয়ে যে দেবানন্দপুরের শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায় টাকা তুলেছিলেন, সেটা জানতেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement