আদালতের বাইরে নিয়োগ মামলায় ধৃত অয়ন শীল। — নিজস্ব চিত্র।
তাঁর হাত ধরেই প্রকাশ্যে এসেছে রাজ্যের পুরসভাগুলিতে বিভিন্ন পদে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ। প্রথমে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত শুরু করলেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অয়ন শীলের বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালাতে গিয়ে পুর নিয়োগেও দুর্নীতির আভাস পায়। সেই সূত্রে রাজ্যের একাধিক হেভিওয়েট নেতা, মন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। মঙ্গলবার বিচারবিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ শেষ হলে সেই অয়নকে আদালতে আনা হয়। সেখানেই ইডি এবং সিবিআই তল্লাশি দিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন অয়ন।
জেল থেকে কলকাতার নগরদায়রা আদালতে আনা হয়েছে অয়নকে। তাঁর মামলা শুনানির জন্য আদালতে উঠবে। তার আগে গাড়ি থেকে নামিয়ে হেফাজত পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার পথে অয়নকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকেরা।
অয়নকে প্রশ্ন করা হয়, ‘‘ফিরহাদ হাকিম, রথীন ঘোষদের ভূমিকা কী? আপনি এঁদের চেনেন? ইডি, সিবিআই তো পর পর তল্লাশি চালাচ্ছে।’’ হাঁটতে হাঁটতেই প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত জবাব দেন অয়ন। তিনি বলেন, ‘‘এগুলো আদালতে বিচারাধীন বিষয়। এ নিয়ে এখন কিছু বলা যাবে না।’’ শুধু এইটুকু বলেই আদালতের ভিতরে এগিয়ে যান অয়ন। আর কোনও প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।
শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ধৃত হুগলি তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সূত্রে কেন্দ্রীয় সংস্থার নজরে আসেন অয়ন। তাঁকেও একই মামলায় গ্রেফতার করা হয়। অয়নের চুঁচুড়ার বাড়ি এবং সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। অভিযোগ, অফিস থেকে পুরসভায় নিয়োগের পরীক্ষার অনেক ওএমআর শিট পাওয়া গিয়েছে। মিলেছে পুর নিয়োগের নথিও। এর পরেই পুরসভাতে নিয়োগের দুর্নীতির বিষয়টি সিবিআই এবং আদালতকে জানায় ইডি। পৃথক ভাবে এফআইআর দায়ের করে শুরু হয় তদন্ত। সেই তদন্তের সূত্রেই গত বৃহস্পতিবার, ৫ অক্টোবর ইডি রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতে হানা দেয়। সাড়ে ১৯ ঘণ্টা চলে তল্লাশি। রাত পৌনে ২টো নাগাদ ইডি আধিকারিকেরা রথীনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। এর পরেই সিবিআই রবিবার যায় রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে। সেখানে প্রায় ১০ ঘণ্টা তল্লাশি চলে। কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের বাড়ি এবং অফিসেও সিবিআই গিয়েছিল। এ ছাড়া, বিভিন্ন পুরসভার প্রাক্তন এবং বর্তমান আধিকারিক, পুরসভার অফিসগুলিতে কেন্দ্রীয় সংস্থা তল্লাশি চালিয়েছে।