ফাইল চিত্র।
বান্ধবীর সঙ্গে সম্পর্কের সংঘাতেই কি খুন? নাকি হরিদেবপুরের অয়ন মণ্ডলের খুনের পিছনে রয়েছে ত্রিকোণ প্রেমের জটিলতাও?
এ ব্যাপারে শনিবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কোনও রকম নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছয়নি। তবে ত্রিকোণ প্রেমের সম্ভাবনাকে উড়িয়েও দেননি তদন্তকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, আপাতত সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দফায়-দফায় জেরাও করা হচ্ছে ধৃতদের।
ত্রিকোণ প্রেমের ক্ষেত্রে অয়ন এবং তাঁর বান্ধবী ছাড়া তৃতীয় ব্যক্তি হলেন বান্ধবীর মা। অয়নের বাবা অমল মণ্ডলও শনিবার দাবি করেছেন, ‘‘বান্ধবী এবং তাঁর মা, দু’জনেই অয়নকে পছন্দ করতেন। আমার ছেলে কী করবে? একটাই তো ছেলে!’’ অয়নের বন্ধুরা দাবি করেছেন, বান্ধবীর মায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার কথা জানাজানি হয়ে গিয়েছিল। এর আগে সেই কারণে এক বার অয়নকে মারধর করেছিলেন বান্ধবীর বাবা। বাড়িতে অয়নের যাতায়াত পছন্দ করতেন না বান্ধবীর বাবা এবং পরিজনেরা।
ত্রিকোণ প্রেম সম্পর্কে অয়নের এক বন্ধুর দাবি, ‘‘বান্ধবীর মা ওকে প্রায়ই বাড়িতে ডেকে পাঠাত। তা জানাজানি হতেই গোলমাল বাধে। এক বার গন্ডগোলের খবর পেয়ে আমরাও গিয়েছিলাম।’’ একই সুর শোনা গিয়েছে অয়নের পরিবারের সদস্যদের গলাতেও।
অয়নের মাথার পিছনে একাধিক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তা থেকে পুলিশ এবং অয়নের বন্ধুদের একাংশের অনুমান, প্রবল আক্রোশ না-থাকলে ও ভাবে একাধিক বার আঘাত করা সম্ভব নয়। শুধু তাই নয়, সে দিন খুনের ছক কষেই অয়নকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল কি না এবং অয়নকে ঝগড়া বাধাতে প্ররোচিত করা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
মায়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে অয়নের বান্ধবীর মনেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, অয়নের খুনের পরে তাঁর বান্ধবী শুধু স্বাভাবিকই ছিলেন না, দেহ লোপাটের পরে নজর ঘোরাতে অয়নের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন। অয়নের পরিবার জানিয়েছে, একাদশীর দিন অয়নের মাকে ফোন করেন ওই তরুণী। অয়নের খোঁজ করেন। এ-ও জানান যে অয়নের মোবাইল বন্ধ। অয়নের মা এ দিন দাবি করেন, ‘‘একাদশীর দিন দুপুরে ফোন করার পর আমার বাড়িতে চলে আসে ও। অয়নের খোঁজ পাচ্ছে না বলেও জানায়। আমি বলি, হয় তো বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছে।’’ একাদশীর দুপুরে ওই তরুণী দীর্ঘক্ষণ অয়নের বাড়িতে ছিলেন এবং নিজের শারীরিক অবস্থা নিয়েও আলোচনা করেন বলে অয়নের মায়ের দাবি। শেষমেশ, পুলিশে যোগাযোগ করার কথা বলে ওই তরুণী বিদায় নেন। অয়নের মা জানান, তাঁদের বাড়িতে থাকার সময় তরুণী মাঝেমধ্যেই কাকে ফোন করে কথা বলছিলেন। তবে ফোনের ও-পারে কে ছিলেন, তা জানাতে পারেনি অয়নের পরিবার।