অশোকনগরে ভাঙচুর হওয়া গাড়ি। ছবি: সুজিত দুয়ারি
রাস্তায় ইট ফেলা নিয়ে গ্রাম্য বিবাদের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল অশোকনগরের ভুরকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের দোগাছিয়া গ্রাম। শনিবার রাতের ঘটনায় গোলমাল ঠেকাতে গেলে পুলিশের উপরে লাঠিসোঁটা ইটপাটকেল নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এক অফিসার-সহ তিন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। জখম হয়েছেন পুলিশের গাড়ির চালকও।
পুলিশ জানিয়েছে, জখম পুলিশকর্মীদের নাম মৃণাল মণ্ডল, উজ্জ্বল বিশ্বাস, অমল বন্দ্যোপাধ্যায়। জখম গাড়ির চালকের নাম কাবিল মণ্ডল। অমলের কপালে কয়েকটি সেলাই পড়েছে। তিনি অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি। শনিবার রাতভর তল্লাশি চালিয়ে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য শাহজাহান মল্লিক ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে। শাহজাহানের সঙ্গে স্থানীয় একটি পরিবারের গোলমাল থামাতেই গিয়েছিল পুলিশ। ওই পরিবারটিও নিজেদের তৃণমূল সমর্থক বলে দাবি করেছে।
শনিবার রাত ৯টা নাগাদ ঝামেলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। অভিযোগ, শাহজাহানের লোকজন পুলিশকে তাড়া করে। পুলিশ ফিরে আসে। রাতে ফের পুলিশ এলাকায় ঢুকতে গেলে এক দল গ্রামবাসী রাস্তায় পুলিশের গাড়ি আটকে দেয়। বাঁশ-লাঠি নিয়ে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পুলিশকর্মীদের মারধর করা হয়।
নিজেকে তৃণমূল কর্মী বলে দাবি করে স্থানীয় বাসিন্দা মুমতাজুল হক আটা বলেন, ‘‘জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদের জেরে শাহজাহান কয়েক মাস আগে আমাদের বাড়িতে বোমা মেরেছিল। এ দিন সে উপস্থিত থেকে পুলিশের উপরে হামলা চালিয়েছে লোকজন দিয়ে। আমাদের বাড়িতেও হামলা চালিয়ে গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ইটপাটকেল ছোড়া হয়েছে। বিষয়টি তৃণমূল নেতৃত্বকে জানিয়েছি। শাহজাহানের দৌরাত্ম্যে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।’’
শাহজাহান অবশ্য পুলিশের উপরে হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। ওই পরিবারটি আমাকে বদনাম করতে এ সব করেছে। ঘটনার সময়ে আমি এলাকায় ছিলাম না।’’ অশোকনগরের বিধায়ক তৃণমূলের ধীমান রায় বলেন, ‘‘দু’পক্ষের লোকজনকে নিয়ে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে। তবে শাহজাহান পুলিশের উপরে হামলার সময়ে ঘটনাস্থলে ছিলেন না বলে জানতে পেরেছি।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘পুলিশকে বলেছি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে। দলীয় ভাবে ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’