আরামবাগের সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার পথে জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কিন্তু স্থানীয় সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ওই হামলা আসলে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। বৃহস্পতিবার হুগলির আরামবাগে সভা ছিল অভিষেকের। তৃণমূল সাংসদের তোপ, সাধারণ মানুষের ক্ষোভের দায় তিনি নেবেন না। একই সঙ্গে বহিরাগত ইস্যুতেও বৃহস্পতিবার ফের সরব হয়েছেন তিনি।
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডা-সহ বিজেপি নেতাদের কনভয় ডায়মন্ড হারবারের সভায় যাওয়ার পথে হামলার মুখে পড়ে। ইট-পাটকেল ছুড়ে গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের দিকে। কিন্তু হামলায় তৃণমূল-যোগ উড়িয়ে দিয়ে তা সাধারণ মানুষের দিকে ঠেলে দিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবারে এসে বিজেপি-র গাড্ডায় পড়েছেন জে পি নড্ডা। তা আমি কী করতে পারি? সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের দায়িত্ব তো আমার নয়।’’
কেন ক্ষোভ? অভিষেকের যুক্তি, নোটবন্দি, জিএসটি-র মতো জনবিরোধী নীতি আর বিজেপি নেতাদের জনবিচ্ছিন্নতার জেরেই এই ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। বিজেপি নেতাদের উদ্দেশে অভিষেকের তোপ, ‘‘লকডাউনের সময় মানুষের খোঁজ নেননি। নোটবন্দি, জিএসটির মতো একের পর এক জনবিরোধী প্রকল্প করে মানুষের জীবনে অন্ধকার নিয়ে এসেছেন।’’ সভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশে অভিষেকের প্রশ্ন, ‘‘লকডাউনের সময় এই নেতাদের ক’দিন দেখেছেন আপনারা? পরিযায়ী শ্রমিকরা রাস্তায়, ব্রিজের উপর দিন-রাত কাটিয়েছে, তখন কোথায় ছিলেন আপনারা?’’
আরও পড়ুন: আইন প্রত্যাহার না করলে সারা দেশ জুড়ে রেল অবরোধ, হুঁশিয়ারি কৃষকদের
‘ভাইপো’ তরজা’য় ফের সরব হয়েছেন অভিষেক। একই সঙ্গে বহিরাগত তত্ত্বকেও উস্কে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি ডায়মন্ড হারবারের সভায় বলেছিলাম, আমার নাম করে বলুন। আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারেননি। এখনও বলছেন ভাইপো। কিন্তু আমি নাম করে বলছি, নড্ডা বহিরাগত, কৈলাস বিজয়বর্গীয় বহিরাগত। আমার বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়ার নিন, আমি আদালতে জবাব দেব।’’ ডায়মন্ড হারবারের ওই সভা থেকেই দিলীপ ঘোষকে গুন্ডা বলেছিলেন অভিষেক। তার জেরে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। এ দিন বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে অভিষেক বলেন, ‘‘যিনি কথায় কথায় বলেন, শ্মশানে পাঠিয়ে দেব, হাত ভেঙে দেব, পা ভেঙে দেব— তাকে কী বলব? ধোয়া তুলসিপাতা?’’
আরও পড়ুন: ‘গুন্ডারাজ’ চলছে, মমতাকে ছুটি দিন, তোপ নড্ডার, পাল্টা তোপ তৃণমূলেরও
গোঘাট, খানাকুল, আরামবাগের মতো এলাকায় বাম জমানায় সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময়ে। সেই প্রসঙ্গ টেনে বাম-বিজেপি-কংগ্রেসকে এক সারিতে বসিয়ে আক্রমণ শানান অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমের হার্মাদরাই বিজেপির জল্লাদ হয়েছে। আপনারা কি চান হুগলিতে আবার সেই সন্ত্রাস ফিরে আসুক?’’
আগামিকাল শুক্রবার থেকে বাড়ি বাড়়ি সরকারের রিপোর্ট কার্ড পৌঁছে দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গে অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, ‘‘তৃণমূল সরকার ১০ বছরের রিপোর্ট কার্ড আপনাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেবে। ক্ষমতা থাকলে মোদী সরকারের ৭ বছরের রিপোর্ট কার্ড দিন ওঁরা।’’ সভায় উপস্থিতদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা আপনাদের কাছে এলে রিপোর্ট কার্ড চাইবেন।’’