ডানকুনির কালিপুরের কাছে এই বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়িতে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ।— নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের গাড়িতে ফের হামলার অভিযোগ উঠল। বিজেপি তৃণমূলের দিকে আঙুল তুললেও রাজ্যের শাসক দল অবশ্য ঘটনার জন্য দিলীপবাবুদের ‘গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব’কেই দায়ী করেছে। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘‘নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্ব আড়াল করতে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে!’’
হুগলির মশাটে রবিবার বিজেপির জনসভা ছিল। যে সভায় দিলীপবাবু বলেছিলেন, ‘‘হাত থাকতে মুখে কেন?’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় তো বটেই, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র এবং বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও দিলীপবাবুর ধারাবাহিক ‘অশোভন মন্তব্যে’র কড়া নিন্দা করেছিলেন। বিজেপির অভিযোগ, সন্ধ্যায় ওই সভা থেকে ফেরার পথে কালীপুরের কাছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা প্রথমে দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ ও দিলীপবাবুর আটকানোর চেষ্টা করে। দুই নেতার নিরাপত্তারক্ষীরাই তাঁদের গাড়ি বার করে নিয়ে যান।
তবে বিজেপির অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলার মুখে পড়ে দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ি। বাঁশ, ইটের আঘাতে গাড়ির পিছনের কাচ ভেঙে যায় এবং জয়বাবুর মাথায় লাগে। কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে। দিলীপবাবুর অভিযোগ, ‘‘বিজেপির অগ্রগতিতে ভয় পাচ্ছেন বলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মীরা বার বার আক্রমণ করছেন।’’
বিজেপির আরও অভিযোগ, এ দিন জনসভায় যাওয়ার পথেও রাহুলবাবুকে কালো পতাকা দেখান তৃণমূল কর্মীরা। সভা থেকে ফেরার পথে আরও বেশি দুষ্কৃতী জড়ো করে হামলা চালানো হয়। বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর বক্তব্য, ‘‘হামলার সময়ে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। তৃণমূলের কারও নির্দেশে দিলীপবাবু এবং জয়বাবুকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে ঘটনার বিবরণ জানিয়ে হুগলির পুলিশ সুপারের শাস্তি দাবি করেছে বিজেপি। হামলার প্রতিবাদে আজ, সোমবার রাজ্যের সব জেলায় বিক্ষোভ, অবরোধ, মশাল মিছিল করবে তারা।
জেলা পুলিশ-প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, তাদের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। রাত পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের হওয়ার খবরও মেলেনি। বিজেপির গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের পাল্টা অভিযোগ করে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক স্বাতী খোন্দকারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাদের কেউ ভাঙচুর করেননি। দিলীপ ঘোষ কোথায় সভা করেছেন, তা-ও জানি না!’’