গাড়িতে বসেই হামলার বর্ণনা দিচ্ছেন রাজু বিস্তা। —নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে থাকাকালীনই হামলা হল দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদের উপরে। তা নিয়ে ফের উত্তপ্ত হওয়ার পথে পাহাড়ের রাজনীতি। পুলিশকে নিষ্ক্রিয় রেখে হামলা চালিয়েছে তৃণমূল, অভিযোগ বিজেপির। তাঁকে খুন করার চেষ্টায় ছিল হামলাকারীরা, দাবি সাংসদ রাজু বিস্তার। তবে সাংসদের উপরে হামলার সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছে তৃণমূল।
দার্জিলিংঙের সাংসদ এ দিন নিজেই প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাঁর উপরে হামলার কথা জানিয়েছেন। কালিম্পং জেলার সিনজিতে মঙ্গলবার একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। পথে মন্দিরখোলা এলাকার চারপুলে তাঁর উপরে হামলা হয় বলে সাংসদ জানিয়েছেন।
সাংসদের দাবি, ৮০-১০০ জন তৃণমূল কর্মী তাঁর পথ আটকান। তাঁদের অনেকের হাতেই ছিল খুকরি, ছুরি-সহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র, দাবি সাংসদের। নিজের বিবৃতিতে রাজু বিস্তা লিখেছেন, ‘‘প্রথমে ওরা আমাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিল। তার পরে আক্রমণ শুরু হয়। আমাদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে।’’ এই হামলায় তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক জখম হয়েছেন বলে সাংসদ জানিয়েছেন। ঘটনাস্থলে বিজেপি এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার যে সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁরাও জখম হয়েছেন বলে সাংসদের অভিযোগ।
এই ভিডিয়োই টুইট করেন রাজু বিস্তা।
আরও পড়ুন: ‘নির্জনতার সুযোগ নিয়ে গায়ে হাত দিয়েছিলেন’, যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত মহীনের এক ‘ঘোড়া’ রঞ্জন ঘোষাল
রাজু বিস্তার দাবি, হঠাৎ করে এই ঘটনা ঘটেনি, পরিকল্পনা করেই ঘটানো হয়েছে। তাঁর আরও দাবি যে, তাঁকে খুন করার ছক কষেছিল তৃণমূল। সিনজি যাওয়ার পথে যে হামলা হতে পারে, সে কথা তিনি আগের দিনই জেনেছিলেন এবং কালিম্পঙের পুলিশ সুপারকে জানিয়েছিলেন। বিবৃতিতে লিখেছেন বিস্তা। তার পরেও পুলিশ সুপার নিরাপত্তার বন্দোবস্ত রাখেননি এবং তৃণমূলের নির্দেশেই তা করেছেন। দাবি বিজেপি সাংসদের।
রাজ্য বিজেপি তীব্র নিন্দা করেছে এই হামলার। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আবার দার্জিলিঙে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা নষ্ট করার একটা চেষ্টা হল। দার্জিলিঙের মানুষ তৃণমূলের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুন্ডারা আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপর হিংসাত্মক আঘাত হানছে।’’
আরও পড়ুন: পাকিস্তান সন্ত্রাসে মদত দেওয়াতেই ভারতের সঙ্গে আলোচনা এগোচ্ছে না, দাবি মার্কিন সরকারের
তৃণমূল অবশ্য হামলার অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছে। উত্তরবঙ্গ তৃণমূলের অন্যতম প্রধান মুখ তথা রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেব আনন্দবাজারকে বলেছেন, ‘‘কোনও হামলার খবর আমার জানা নেই।’’ তবে হামলা যদি হয়েও থাকে, তার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলে গৌতমের দাবি। তাঁর প্রশ্ন,, ‘‘রাজু বিস্তা তো কিছু দিন আগেই লক্ষ লক্ষ ভোটে জিতলেন। তা হলে এত তাড়াতাড়ি তাঁর উপরে আবার হামলা হচ্ছে কেন?’’ হামলা হয়ে থাকলে, তা জনরোষের ফল বলে গৌতম দেবের মত।