ভাঙন নিয়ে বিক্ষোভ, আক্রমণে মুখ্যমন্ত্রী

দল ভাঙানো নিয়ে সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীকে বিরোধীদের আক্রমণ। অন্য দিকে কংগ্রেস-সিপিএমের ‘বন্ধুত্ব’কে মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা আক্রমণ। এই নিয়ে সোমবার উত্তপ্ত থাকল বিধানসভা। অধিবেশন শুরুর আগেই পূর্ব ঘোষণামতো বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে কংগ্রেস বিধায়কেরা জেলা পরিষদ সদস্য থেকে বিধায়ক-ভাঙানো, বন্যা থেকে গঙ্গা-ভাঙন— নানা বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৬ ০৪:১২
Share:

ফাইল চিত্র।

দল ভাঙানো নিয়ে সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীকে বিরোধীদের আক্রমণ। অন্য দিকে কংগ্রেস-সিপিএমের ‘বন্ধুত্ব’কে মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা আক্রমণ। এই নিয়ে সোমবার উত্তপ্ত থাকল বিধানসভা।

Advertisement

অধিবেশন শুরুর আগেই পূর্ব ঘোষণামতো বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে কংগ্রেস বিধায়কেরা জেলা পরিষদ সদস্য থেকে বিধায়ক-ভাঙানো, বন্যা থেকে গঙ্গা-ভাঙন— নানা বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিধানসভার মূল ফটক থেকে বিক্ষোভ দেখিয়ে তাঁরা অম্বেডকরের মূর্তির নীচে সমবেত হন। সেখানে মান্নান বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকারের হাতে গণতন্ত্র বিপন্ন। ২১১টি আসন জেতার পরেও প্রতিদিনই বিরোধী দল ভাঙিয়ে জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত দখলের চেষ্টা করছে। রাজ্যকে যে ভাবে বিরোধীশূন্য করার চেষ্টা হচ্ছে, তা রাজ্যবাসী মেনে নেবে না।’’ পরে কংগ্রেসের বিক্ষোভে এসে যোগ দেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও। তাঁরও একই অভিযোগ, ‘‘রাজ্যকে বিরোধীশূন্য করার চেষ্টা করছে শাসক তৃণমূল।’’ এই নিয়ে অভিযোগ জানাতে আজ, মঙ্গলবারই রাজ্যপালের কাছে যাচ্ছে বাম পরিষদীয় দল। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন জমায়েতে যোগ দেননি। তবে দূর থেকে হাত নেড়ে তিনি বিরোধীদের বিক্ষোভকে সমর্থন জানান। অর্থাৎ অধিবেশন শুরুর আগেই স্পষ্ট হয়ে যায়, মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পাওয়ার আশায় বিরোধীরা এককাট্টা হয়েছেন।

সভার শুরুতে রাজ্যের নাম পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা ছিল। কিন্তু বিরোধীরা সরকার-বিরোধী পোস্টার নিয়ে ওয়েলে নেমে দল-ভাঙা থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী বিলের প্রতিলিপি ছিড়ে ফেলেন। স্পিকার তাঁকে ধমকে শান্ত হতে বলেন। রাজ্যের নাম বদল নিয়ে বলতে উঠে বার বার প্রশ্নের মুখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী এক সময়ে বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা কয়েকটা লোক। কয়েক মাস আগে হেরে গিয়েও লজ্জা করে না! সব ব্যাপারে বিরোধিতা। খালি শকুনের মতো বসে থাকেন, কখন মানুষ মরবে, আর বিরোধিতা করব!’’ কংগ্রেস ওয়াক-আউট করলেও বামেরা করেনি। যদিও তারা মমতার বক্তব্যের সময়ে প্রশ্ন তুলছিল। ক্ষুব্ধ মমতা বলতে থাকেন, ‘‘এখন তো সিপিএমের আর কোনও অস্তিত্ব নেই। তারা কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে (মার্জার) করে গিয়েছে!’’ এমনকী, কেন পোস্টার নিয়ে বিধানসভার ভিতরে বিধায়কেরা ঢুকেছেন, তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার পরেই পোস্টার সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন।

Advertisement

পরে মিডিয়া সেন্টারে মমতা আবার কংগ্রেস-সিপিএমের সখ্যকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস তো সিপিএমের শাখা সংগঠনে পরিণত হয়েছে। কিছু পেলেই নারদ-নারদ শুরু করে! আমি যে কোনও রাজনীতিকে সম্মান করি। কিন্তু ওরা যা করছে, তা রাজনীতি নয়।’’ মুখ্যমন্ত্রী অনেক কিছু বললেও দলভাঙা প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি।

জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি নুরজাহান বেগম-সহ আরও দুই সদস্য এ দিন সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এর ফলে ১৯ আসনের জেলা পরিষদে তৃণমূলের সদস্যসংখ্যা দাঁড়ালো ১৪। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার এক সদস্য লিখিত ভাবে তৃণমূলকে জানিয়েছেন, বাইরে থেকে তিনি সমর্থন দেবেন। তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘এর পরে জলপাইগুড়িতে তৃণমূল আরও বলিষ্ঠ হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement