রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যপালের ভাষণ এড়িয়েই কি আসন্ন বাজেট অধিবেশন করতে চাইছে রাজ্য সরকার! অধিবেশন চেয়ে নবান্নের তৎপরতায় এই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে সংশ্লিষ্ট মহলে। সে ক্ষেত্রে এ বারের রাজ্য বাজেট নিয়ে নবান্ন ও রাজভবনের মধ্যে ফের টানাপড়েনের সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে।
রাজ্যের বার্ষিক অর্থ বরাদ্দের খতিয়ান পেশের জন্য আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে অধিবেশন চেয়েছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি সরকারের এই ইচ্ছার কথা জানিয়ে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভা সূত্রে খবর, সেই মতোই অধিবেশন শুরুর প্রশাসনিক প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। বাজেট অধিবেষন সাধারণত শুরু হয় রাজ্যপালের ভাষণের মাধ্যমে। কিন্তু বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন অনির্দিষ্ট কাল মুলতুবি করা হয়েছিল, সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়নি। ফলে, বিধি মোতাবেক এখন অধিবেশন ডাকার জন্য রাজ্যপালের সম্মতির আর প্রয়োজন নেই। তবে রাজভবন ও নবান্নের সম্পর্কের ভিত্তিতে সেই সূত্রেই প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্য সরকার কি রাজ্যপালকে এড়িয়েই বাজেট অধিবেশন চাইছে?
পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব অবশ্য এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘এটুকু বলতে পারি, বিধি মেনেই সরকার অধিবেশন চেয়েছে। তার জন্য রাজ্যপালের সম্মতির প্রয়োজন নেই।’’ তবে রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়াই তাঁরা অধিবেশন চাইছেন কি না, এখনই সেই প্রশ্ন অপ্রাসঙ্গিক বলে মনে করছেন তিনি। রাজ্যের বাজেট প্রস্তাবে অবশ্য রাজ্যপালের অনুমোদন আবশ্যিক। পরিষদীয় মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘আশা করি, রাজ্য সরকারের প্রস্তাব নিয়ে কোনও জটিলতা তৈরি হবে না।’’
রাজ্যপাল থাকাকালীন বিধানসভার অধিবেশনে জগদীপ ধনখড়ের ভাষণ নিয়ে বড় সংঘাত তৈরি হয়েছিল নবান্ন ও রাজভবনের মধ্যে। ওই ভাষণ রাজ্য সরকারের তৈরি হলেও ধনখড় তাতে নিজস্ব মত যোগ করতে চেয়েছিলেন। রাজ্যের আপত্তিতে তা হয়নি। তবে অধিবেশনের শুরুতে বিরোধীদের আপত্তিকে সামনে রেখে বক্তৃতা না করেই বিধানসভা ছেড়ে যেতে উদ্যত হয়েছিলেন ধনখড়। তাতে বাজেট পাশের প্রক্রিয়া আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। বিধানসভার ভিতরে সরকার পক্ষের বিধায়কেরা দীর্ঘ ক্ষণ তাঁকে ঘিরে রেখেছিলেন এবং রাজ্যপাল বক্তৃতা করায় সেই সম্ভাবনা কেটেছিল। এই প্রেক্ষাপটে এ বার রাজ্য সরকারের পদক্ষেপে সেই ফের সংঘাতের আঁচ করছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই।