বন্যার জলে সাঁতার কেটে ওষুধ দিতে যাচ্ছেন আশাকর্মী। নিজস্ব চিত্র
ক্যানিংয়ের পর ঘাটাল। আশা জাগাচ্ছেন আশাদিদিরা।
এক আশাদিদি রীতিমতো সাঁতরে পৌঁছে দিয়েছেন ওষুধ। অন্যজন নিজেই নৌকা চালিয়ে ওষুধ নিয়ে হাজির হয়েছেন দুর্গতদের কাছে। ঘাটালের ওই দুই আশাদিদির ছবি ভাইরাল হতেই চর্চা চলছে স্বাস্থ্য দফতরে। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা বলেন, ‘‘এর আগেও জেলার আশাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বহু কাজ করেছেন। ঘাটালের ওই আশাকর্মীরাও স্বাস্থ্য দফতরের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।’’ জেলাশাসক রশ্মি কমলও দুই আশাকর্মীর কাজের প্রশংসা করেছেন।
দিনকয়েক আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে এমনই কিছু আশাদিদির ভূমিকা প্রশংসা কুড়িয়েছিল। বন্যার জলে ভেসে গিয়েছিল এলাকা। সেই জল ভেঙে হাঁড়িতে শিশুকে শুইয়ে পোলিয়ো টিকা খাওয়াতে নিয়ে এসেছিলেন বাবা। কোমর জলে দাঁড়িয়ে টিকা খাইয়েছিলেন এক আশাকর্মী। শুধু একজন নয়। এমন কাজ করেছিলেন আরও অনেকে। দায়িত্ব পালনে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন ঘাটালের বলরামপুরের বাসিন্দা আশাকর্মী শ্যামলী মান্না। ঘাটালের বন্যার জল এখন নামতে শুরু করলেও বলরামপুরের মতো কিছু জায়গা এখনও জলমগ্ন। স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে শ্যামলী জানতেন বলরামপুরে বেশ কয়েকজন জ্বরে আক্রান্ত। ওষুধ পৌঁছে দিতে হবে তাঁদের কাছে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে শ্যামলী ওষুধ হাতে নিয়ে দেখেন সে সময় কোনও নৌকা নেই। জলমগ্ন ঘাটালে নৌকাই এখন যাতায়াতের মাধ্যম। নৌকার জন্য অপেক্ষা না করে সাঁতার কেটে শ্যামলী পৌঁছে যান আক্রান্তদের কাছে। তাঁর সাঁতারের ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই নৌকার ব্যবস্থা করে প্রশাসন। মঙ্গলবারই আবার ঘাটাল থানার রথিপুরে রীতা দোলই নামে অন্য এক আশাকর্মী নিজে নৌকা চালিয়ে ওষুধ পৌঁছে দিয়েছেন। শ্যামলী ও রীতার ভূমিকায় গর্বিত স্বাস্থ্য দফতর। শ্যামলী অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি সাঁতার জানি। ওষুধের জন্য মানুষগুলো ছটফট করছিল। তাই সাঁতার কেটে পৌঁছে দিয়েছি। এটা তো আমাদের দায়িত্ব।”
বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ অভিষেক মিদ্যা বলেন, “ক’দিন জল পেরিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন। মঙ্গলবার ওই আশাকর্মী সাঁতার কেটে ওষুধ পৌঁছে দিয়েছেন। জল কমলে ওই আশাকর্মীর কাজের জন্য হাসপাতাল থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।”