—প্রতীকী ছবি।
মাস খানেক আগেই দেশের ৩২টি ডিভিশনকে দূরপাল্লার এক্সপ্রেসের সময়ানুবর্তিতা নিয়ে সতর্ক করেছিল রেল বোর্ড। অভিযোগ, তাতেও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি।
ওই সব ডিভিশনের মধ্যে এ রাজ্যের হাওড়া, আসানসোল, খড়্গপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ ডিভিশনও ছিল। রেলের হিসেবে দূরপাল্লার ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা চলতি বছরের অগস্টের মাঝামাঝি সময়ে গত বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ কমে ৭৩ শতাংশের আশপাশে রয়েছে। পরিস্থিতি এমন যে, সারা দেশে প্রতি চারটি দূরপাল্লার ট্রেনের মধ্যে একটি সর্বদা দেরিতে ছুটছে। রেল জানিয়েছে, পণ্য পরিবহণ গত বছরের তুলনায় বাড়লেও মালগাড়ির
গড়পড়তা গতিবেগও ঘণ্টায় ৩২.৪ কিলোমিটার থেকে কমে ২৭.৫ কিলোমিটার হয়েছে।
দূরপাল্লার ট্রেনের পাশাপাশি করুণ অবস্থা শহরতলির লোকাল, বিভিন্ন মেমু এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেনেরও। ওই সব ট্রেনের সময়ানুবর্তিতার তথ্য রেলের পক্ষ থেকে সামনে না এলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যাত্রীদের অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। যাত্রীদের অভিজ্ঞতায় হাওড়া এবং খড়্গপুর শাখার বিভিন্ন লোকাল এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেনের বেশিরভাগই সময়ে চলছে না। বিগত বছরে তুলনামূলক ভাবে উন্নত সময়ানুবর্তিতার মধ্যেই রেলের প্রকাশিত তথ্যে দূরপাল্লার ট্রেনের সম্মিলিত বিলম্বের পরিমাণ ছিল ১ কোটি মিনিটের বেশি। ১ কোটি মিনিট মানে ১৪ বছর। রেলকর্মীদের একাংশের কথায়, গত বছর তাও পরিস্থিতি ভাল ছিল। তাতেই যদি এই দেরি হয়, এ বছরের অবস্থাটা তো ভয়াবহ।
ট্রেনের সময়ানুবর্তিতার এমন হাঁড়ির হাল কেন? রেল সূত্রের খবর, সব ক’টি ডিভিশনেই রক্ষণাবেক্ষণের কাজে জোর দেওয়ার ফলে বহু ট্রেন দেরিতে চলছে। হাওড়া, আসানসোল, খড়্গপুরের মতো ডিভিশনের ক্ষেত্রে রেলের ট্র্যাক, ওভারহেড তার এবং সিগন্যালিং ব্যবস্থার একাধিক মেরামতির কাজ চলছে। এর মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর এবং পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনে লোকাল এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেন নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি।
অভিযোগ, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রায়শই ট্রেন বাতিল হচ্ছে। বহু ট্রেনই অন্য পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কখনও মাঝপথে গতি নিয়ন্ত্রণও করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে রেলের আধিকারিকদের দাবি, নির্দিষ্ট সময় অন্তর যে সব রুটিন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয়, তার কাজ কোনও অবস্থাতেই বকেয়া রাখা যাবে না বলে জানিয়েছে রেল বোর্ড। পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে রক্ষণাবেক্ষণের ওই সব কাজ বিপুল পরিমাণে জমে রয়েছে। বোর্ড জানিয়েছে, প্রয়োজনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে ওই কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। কিন্তু, কোনও ভাবেই ফেলে রাখা যাবে না।