—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়তেই লাগাম পড়েছে তাপমাত্রায়। তবে বেড়েছে ভ্যাপসা গরমের অস্বস্তি। তার ফলে সোমবার, ইদের দিন ‘লু’-এর দাপট সইতে হয়নি গাঙ্গেয় বঙ্গের বেশির ভাগ জেলাতেই। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা আশার আলোও দেখতে পেয়েছেন আবহবিদেরা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। সেই সম্ভাবনা সত্যি হলে সাময়িক ভাবে স্বস্তিও মিলতে পারে।
গত সপ্তাহে শুষ্ক গরমের দাপট মিলছিল। তাপপ্রবাহ বইতে পারে, এমন আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। মূলত বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পের জোগান কম থাকার ফলেই পশ্চিম দিক থেকে শুকনো গরম বাতাস ঢুকছিল গাঙ্গেয় বঙ্গে। রবিবার থেকে সেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। এ দিন সকালে কলকাতা লাগোয়া এলাকা-সহ বিভিন্ন অঞ্চলে আকাশে অল্পবিস্তর মেঘ দেখা গিয়েছে। আবহাওয়া দফতরের খবর, গত শনিবার কলকাতার আপেক্ষিক আর্দ্রতা নেমে গিয়েছিল ২৬ শতাংশে। এ দিন ন্যূনতম আর্দ্রতা ছিল ৫৪ শতাংশ। তার ফলেই শুকনো গরমের অস্বস্তি কমেছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের খবর, এ দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দমদম, ব্যারাকপুরের মতো মহানগর লাগোয়া এলাকাগুলিতেও তাপমাত্রা সে ভাবে বাড়েনি। বাঁকুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠেছে। গত দু’দিনের তুলনায় পশ্চিমাঞ্চলের এই জেলায় তাপমাত্রা কমলেও গরমের অস্বস্তি মালুম হয়েছে। পুরুলিয়ায় গরম এ দিমন অসহনীয় ছিল না। দুপুরে মেলেনি শুকনো গরম হাওয়া বা ‘লু’-এর দাপট। বীরভূমের শ্রীনিকেতনে এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আকাশে মেঘ থাকায় ভ্যাপসা গরমের অস্বস্তি মালুম হয়েছে। পথেঘাটে অনেকেই দরদরিয়ে ঘেমেছেন।
‘লু’-এর দাপট দেখা যায়নি পশ্চিম বর্ধমানের খনি-শিল্পাঞ্চলেও। ওই জেলার বিভিন্ন এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছেপিঠে ঘোরাফেরা করেছে। তবে গরম হাওয়া রবিবার থেকেই সেখানে বন্ধ হয়েছে। তার বদলে মিলেছে ঘামের অস্বস্তি। পূর্ব বর্ধমানেও এ দিন আকাশ আংশিক মেঘলা ছিল। এ দিকে, ইদের ছুটিতে অনেকেই ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এ দিন ওই জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রবল মাথাচাড়া না দিলেও গরমের অস্বস্তি ভালই টের পাওয়া গিয়েছে। ‘ঝাড়গ্রাম ডিস্ট্রিক্ট হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক শিবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘পরপর তিন দিন ছুটি থাকায় অনেক পর্যটক এসেছিলেন। গরমের জন্য পর্যটকদের এসি গাড়িতে বেড়ানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছিল।’’ খড়্গপুর, ঘাটাল মহকুমাতেও অস্বস্তিকর গরম ছিল।
আবহবিদদের অনেকে বলছেন, এখনও আর্দ্রতার যা পরিমাণ তাতে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কারণ, ওই জলীয় বাষ্পই আরও গরম হয়ে বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে উঠে ঘনীভূত হয়ে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করে। আজ, মঙ্গলবার থেকে বাতাসে জলীয় বাষ্প আরও কিছুটা বাড়তে পারে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ যত বাড়বে, ততই ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা জোরালো হবে।
কোথায় কত
পানাগড় ৩৮.৬
আসানসোল ৩৮.২
বাঁকুড়়া ৩৭.৯
শ্রীনিকেতন ৩৬.৫
বহরমপুর ৩৬.৪
মেদিনীপুর ৩৫.৫
বর্ধমান ৩৫.৪
দমদম ৩৫.২
কলকাতা ৩৩.৮
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ডিগ্রি সেলসিয়াসে
সূত্র: আলিপুর আবহাওয়া দফতর