ফাইল চিত্র।
স্কুল বন্ধ। বিনা ব্যবহারে পড়ে রয়েছে স্কুলের খেলাধুলোর সরঞ্জামও। সে ঘর তালাবন্ধ। তার মধ্যেই পড়ে রয়েছে জ্যাভলিনও। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকেরাই বলছেন, সেই জ্যাভলিনে উই ধরেছে। কোথাও পড়ে রয়েছে ঘরের কোণে ধুলো মেখে।
নীরজ চোপড়ার হাত ধরে ভারত অলিম্পিক্সে সোনা পাওয়ার পরে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার শ্রীশচন্দ্র বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম বিশ্বাসই তাঁর ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, “বিদ্যালয়ের জ্যাভলিনটা উইপোকায় নষ্ট করে দিয়েছে।” রবিবার তিনি বলেন, ‘‘খুবই দুঃখ হয়, এত খরচ করে কেনা জিনিসগুলো পড়ুয়াদের উৎসাহ সত্ত্বেও তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।’’ আর এক শিক্ষক ফেসবুকে লিখেছেন, “আজও স্কুলের ঘরের কোণে জ্যাভলিন রাখা আছে। ধুলো জমেছে তাতে। কিন্তু কেউ হাত দেয় না। তার জনপ্রিয়তা আর নেই। ফলে চর্চার অভাবে তাতে মরচে পড়েছে।”
কিন্তু মুর্শিদাবাদে অতীতে স্কুলে জ্যাভলিন নিয়ে ভালই চর্চা ছিল। তাতে জেলা, রাজ্য স্তরে সাফল্যও এসেছে। বেলডাঙা দেবকুণ্ড এসএআরএম গার্লস হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুন বলেন, “আমাদের মাদ্রাসায় জ্যাভলিন থ্রো অভ্যাস করানো হত। ছাত্রীরা নিয়মিত বর্শা ছোড়া অভ্যাস করত। তবে এখন কোভিডে মাদ্রাসা বন্ধ। ফলে সবই বন্ধ।” বেলডাঙা সিআরজিএস হাইস্কুলের প্রাক্তন ছাত্র আরফাত শেখ জেলার হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বিভিন্ন স্তরে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘একাধিক স্কুলে গেমস রুম ক্লাস রুমের মতোই বন্ধ। পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে হকি স্টিক থেকে জ্যাভলিন।’’ তবে কিছু স্কুলের দাবি, গেমস রুম খুলে পরিষ্কার করা হয় মাঝেমধ্যেই। কিন্তু আরফাত বলেন, “স্কুলে বর্শা থাকলেই তো আর হবে না। তা নিয়ে মাঠে নামতে হবে।” স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষকদের বক্তব্য, কোভি়ডের বর্তমান পরিস্থিতিতে অ্যাথলেটিক্সের চর্চা আবার শুরু হতে পারে। আরফাতের কথায়, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে ফুটবলের মতো বডি কন্ট্যাক্ট গেমে সমস্যা থাকলেও বর্শা ছোড়া একাই অনুশীলন করা যায়।’’
জ্যাভলিনে রাজ্য ও দেশে সফল হয়েছেন বহরমপুরের প্রশান্ত ঘোষ। তিনি রবিবার বলেন, “জ্যাভলিনের চর্চা আগের মত নেই। এখন তো স্কুলও বন্ধ। আর একটা কথা হল, শারীরবিদ্যা বা চর্চা বিষয়টি স্কুলে আবশ্যিক ছিল। এখন তা ঐচ্ছিক। ফলে আগের মতো দরদও নেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে।”