ভাঙড় থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার। — ফাইল চিত্র।
ভাঙড়ে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে সোমবার থেকে। এ কথা হাই কোর্টে জানাল রাজ্য সরকার। নিজের নির্বাচনী এলাকায় রাজ্য সরকারের ১৪৪ ধারা জারি করা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। সেই মামলার শুনানিতে সোমবার থেকে ভাঙড়ে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করার কথা জানিয়ে দেয় রাজ্য। এর ফলে ভাঙড়ের বিধায়কের করা মামলার আর যৌক্তিকতা নেই বলেও যুক্তি দেখিয়েছে রাজ্য। বারুইপুর এসডিও-র তরফে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে সোমবার। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বারুইপুরের মহকুমা শাসক সুমন পোদ্দার।
১৪৪ ধারা জারি আছে, এই কারণ দেখিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে দু’বার নওশাদকে ভাঙড়ে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়নি। গত ১২ জুলাই এবং গত ১৭ জুলাই নওশাদকে ভাঙড়ে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। এর পর এ নিয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন নওশাদ। সোমবার হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে ছিল সেই মামলার শুনানি। রাজ্যের বক্তব্য জানার পর আদালতও জানিয়ে দেয়, এখন আর বিধায়কের ভাঙড়ে ঢুকতে বাধা নেই। ফলে ওই মামলার নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
কিছু দিন আগেই ভাঙড় থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করেন ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। তিনি দলের তরফে ভাঙড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত। বিধানসভার বাদল অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে শওকত বলেন, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি, ভাঙড় থেকে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হোক। ভাঙড়ের উত্তপ্ত পরিবেশের কারণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। আমার মনে হয়, এখন ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া উচিত। ভাঙড়ের সাধারণ, খেটে খাওয়া গরীব মানুষের অসুবিধা হোক, আমরা এটা কখনও চাই না।’’
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। তৃণমূল এবং আইএসএফ কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ওই এলাকায়। এখনও পর্যন্ত দুই দল মিলিয়ে মোট ছয় জন নিহত হয়েছেন। পঞ্চায়েত ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার পর ভাঙড়ে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। সম্প্রতি ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের আওতায় নিয়ে আসার প্রস্তাবও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেই সোমবার হাই কোর্টে ভাঙড় নিয়ে নিজের অবস্থানের কথা জানিয়ে দিল রাজ্য।