ফাইল চিত্র।
নন্দীগ্রাম কাণ্ডে তিন পুলিশ অফিসার-সহ মোট ১১ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল। বাকি আট জন হলেন পূর্ব মেদিনীপুরের তৎকালীন সিপিএম নেতা।
সোমবার হলদিয়া মহকুমা আদালতের বিচারক শুভদীপ চৌধুরি এই পরোয়ানা জারি করেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, অনিচ্ছাকৃত খুন, ইচ্ছাকৃত ভাবে ঘাতক অস্ত্র ব্যবহার করে খুনের চেষ্টা, সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপাটের বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ এনেছে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে অভিযুক্তদের।
২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে পুলিশি গুলিচালনার ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। দিন তিনেক আগে মোট বারোজনের নামে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিয়েছে তারা। বাদল গাড়ুদাস নামে এক সিপিএম নেতা আগেই জামিনে মুক্ত রয়েছেন। পূর্বমেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘এখনও গ্রেফতারি পরোয়ানার কপি পাইনি। পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আদালতের নির্দেশ মানতে হলে দুই আইপিএস অফিসার দেবাশিস বড়াল, সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আর এক ডিএসপি শেখর রায়কে গ্রেফতার করতে হবে।
জানা গিয়েছে, আগাম জামিনের আবেদন করতে পারেন তাঁরা। কিন্তু জামিন নাকচ হয়ে গেলে ওই তিন পুলিশ অফিসারকে গ্রেফতার করা ছাড়া স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে অন্য কোনও পথ খোলা নেই বলে জানান নবান্নের এক কর্তা।
জমি আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালনার ঘটনায় পুলিশ অফিসার ছাড়াও সিপিএম নেতাদেরও দুষেছে সিবিআই। চার্জশিটে খেজুরির তৎকালীন সিপিএম নেতা বিজন রায়, রবিউল হোসেন, হিমাংশু দাস, প্রজাপতি দাসের নামও রয়েছে। ১৪ মার্চের ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই মামলায় ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে হলদিয়া আদালতে জমি আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধেই মূল চার্জশিট দেয় সিবিআই। সে সময় ওই চার্জশিট নিয়ে তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধেই বিরোধিতায় নামে তৃণমূল।
এ দিন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘সিবিআই তদন্তে পুরোপুরি খুশি নই। যাঁরা আসল পরিকল্পনাকারী, সিবিআই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। তবে সিপিএম ও পুলিশ একযোগে যে গুলি চালিয়েছিল, এখন তা প্রমাণিত হচ্ছে।’’
জেলা সিপিএম সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘অতিরিক্ত চার্জশিটে আমাদের দলের নেতা হিমাংশু দাসের নাম রয়েছে জানতে পেরেছি । বাকিরা এখন আর আমাদের দলে নেই। হিমাংশুবাবুর জন্য আইনি লড়াই করা হবে।’’