মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির গলিতে ঢোকার মুখেই গ্রেফতার হন ওই যুবক। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কাছে ধরা পড়লেন এক সশস্ত্র যুবক। পুলিশ সূত্রে খবর, কালীঘাট চত্বরে মমতার বাড়ির গলিতেই ধরা পড়েছেন তিনি। পুলিশের স্টিকার লাগানো গাড়ি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় ঢোকার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু কালীঘাট থানার পুলিশ তাঁকে ধরে ফেলে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল।
শুক্রবার দুপুরে এই ঘটনা যখন ঘটছে, তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা তাঁর কালীঘাটের বাড়িতেই ছিলেন। ধর্মতলায় তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের মঞ্চে আর কিছু ক্ষণের মধ্যেই যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। বাড়ি থেকে বেরaনোর কথা ছিল আধ ঘণ্টার মধ্যেই। তার আগেই তাঁর বাড়ির গলির ভিতর ঢোকার চেষ্টা করতে দেখা যায় ওই যুবককে। পুলিশের স্টিকার লাগানো কালো রঙের একটি গাড়িতে ওই যুবককে অপেক্ষা করতে দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। তারা ওই গাড়িটির দিকে এগোতেই সেটি মমতার বাড়ির গলিতে ঢোকার চেষ্টা করে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির ব্যাগের ভিতর ভোজালি, আগ্নোয়াস্ত্র-সহ অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্রও ছিল। আর ছিল মাদক। গাড়ির সামনে ‘পুলিশ’ লেখা একটি বোর্ড লাগিয়ে রেখেছিলেন তিনি। এক রকম গায়ের জোরেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি লাগোয়া মিলন সংঘ ক্লাবের গেটকে পাশ কাটিয়ে ঢুকতে চাইছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁকে বাধা দেয় কালীঘাট থানার পুলিশ।
পরে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল বলেন, ‘‘এমন একটা দিনে এই ঘটনাটিকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। ওই ব্যক্তির সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। ছিল বিভিন্ন সংস্থার পরিচয়পত্র। এর মধ্যে একটি বিএসএফের পরিচয়পত্রও ছিল। তবে জেরায় তিনি নানা রকম কথা বলছেন। এমনও বলছেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসছিলেন। কিন্তু উনি যদি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতেই আসবেন, তা হলে তাঁর কাছে অস্ত্র ছিল কেন?’’
শেখ নুর আমিন। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর কাছ থেকে বিএসএফের পরিচয়পত্র পাওয়া গিয়েছে। নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ সূত্রে খবর, ‘পুলিশ’ লেখা ওই গাড়িটির নম্বর ডব্লিউবি ০৬ইউ **৭৭। এই গাড়ি শেখ নুর আমিন নামে এক ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রার করা। পুলিশ আপাতত জানতে পেরেছে এই নুর পশ্চিম মেদিনীপুরের আলিগঞ্জ কসাইপাড়ার বাসিন্দা।
পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে নুরের কাছ থেকে বিএসএফ এবং অল ইন্ডিয়া পুলিশ লেখা আইবি-র পরিচয়পত্র পেয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের টুপি, পুলিশের বেল্ট এবং একটা কার্ডে লেখা সিজিও কমপ্লেক্সের ঠিকানাও পেয়েছে তারা। যদিও নুর ঠিক কী উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় পুলিশের গাড়ির আড়াল নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন, তা স্পষ্ট নয়।
এ দিকে, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছ থেকে সশস্ত্র যুবককে গ্রেফতার করার ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের যে দায়িত্ব, তা তারা পালন করছে না বলেই এমন হচ্ছে। তারা রাজ্যে ভোট সন্ত্রাসে মন দিয়েছেন। ফলে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। অবিলম্বে কালীঘাট থানার আইসি এবং ওসিকে সাসপেন্ড করা উচিত।’’