— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ফাঁসি রদ চেয়ে শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন জয়নগরকাণ্ডের অপরাধী। এ বার সেই মামলা গৃহীত হল উচ্চ আদালতে। সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি গৃহীত হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় মুস্তাকিন সর্দার নামে ওই যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন বারুইপুরের অতিরিক্ত জেলা দায়রা ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। গত সপ্তাহেই সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মুস্তাকিন। মৃত্যুদণ্ড রদের আবেদন করে মামলা করার অনুমতি চান মুস্তাকিনের আইনজীবী। মামলা করার অনুমতিও দেয় আদালত। এর পর শুক্রবার দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে শাস্তি রদের আবেদন করেন মুস্তাকিন। মামলাকারীর যুক্তি, এই মামলায় তাড়াহুড়ো করে বিচার করা হয়েছে। তদন্ত এবং বিচারপ্রক্রিয়াতেও অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। তা ছাড়া, মামলাকারীর প্রশ্ন ছিল, আরজি করের ঘটনাকে যেখানে আদালত ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়’ বলেছে, সেখানে এই মামলাকে ‘বিরলতম’ বলে কী ভাবে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে পারে আদালত? এই সব নানা কারণ দেখিয়ে মৃত্যুদণ্ড রদের আবেদন করেছিলেন মুস্তাকিন।
সোমবার ওই মামলায় নিম্ন আদালতকে ‘পেপারবুক’ তৈরির নির্দেশ দিয়েছে দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। পেপারবুকে গোটা মামলার শুরু থেকে রায় ঘোষণা পর্যন্ত যাবতীয় ঘটনাবলির পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা থাকতে হবে। এ ছাড়া, দোষীকে যে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত, সেই নির্দেশের উপরেও স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
গত বছরের ৪ অক্টোবর জয়নগর থানা এলাকার একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় ন’বছরের এক শিশুর দেহ। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল ওই নাবালিকা। শেষমেশ গভীর রাতে বাড়ির কাছের একটি জলাজমি থেকে উদ্ধার হয় ওই নাবালিকার দেহ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। এর পর ৫ অক্টোবর ভোরে অভিযুক্ত মুস্তাকিনকে গ্রেফতার করে জয়নগর থানার পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গড়া হয় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। ঘটনার এক মাসের মাথায় বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করে গত বছর ৫ ডিসেম্বর অভিযুক্ত মুস্তাকিনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। ৬ ডিসেম্বর দোষীর ফাঁসির সাজা ঘোষণা হয়। ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও হয়। অভিযুক্তকে গ্রেফতার থেকে শুরু করে তদন্ত, ‘দ্রুত’ বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করা, সাজা ঘোষণা— সবটাই শেষ হয় ৬৪ দিনে।