সহগলের পাশাপাশি অনুব্রতের মোবাইল ফোনও পাঠানো হতে পারে ফরেন্সিক ল্যাবে। ফাইল চিত্র।
গরু পাচার কাণ্ডে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী সহগল হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর নির্দেশ দিল আদালত। গ্রেফতার হওয়ার ৭০ দিন পর, বৃহস্পতিবার সহগলকে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁকে পুনরায় ১৪ দিনের জেল হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর। অন্য দিকে, অনুব্রতের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত মোবাইল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হবে কি না, সেই সংক্রান্ত শুনানি হবে আগামী ২০ অগস্ট।
গরু পাচার মামলায় ধৃত সহগলকে সিবিআই তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দেন বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। এ ছাড়া, পরবর্তী শুনানির দিন সহগল সম্পর্কিত সমস্ত রিপোর্ট আদালতে পেশ করার নির্দেশ দেন তিনি।
সহগলের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলের আড়াই বছরের মেয়ে অসুস্থ। মায়ের শারীরিক পরিস্থিতিও খারাপ। সহগল নিজেও খুব অসুস্থ। এই সমস্ত বিষয় বিচার করে তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। সহগলের অসুস্থতার কথা শুনে বিচারক জিজ্ঞেস করেন, “কী হয়েছে?” সহগল তখন বলেন, “বুকে সংক্রমণ হয়েছে। ঠান্ডা লেগেছে। জেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। এখন কিছুটা সুস্থ আছি।” অন্য দিকে, সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার বলেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলের হয়ে সহগল যে টাকা সংগ্রহ করতেন, তার প্রমাণ মিলেছে। তাই তাঁর জামিন মঞ্জুর সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।” তিনি এ-ও জানান, গরু পাচার মামলার তদন্ত দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। যাঁর ‘ছত্রছায়ায়’ সহগল ছিলেন, সেই অনুব্রতকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে রেখে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। সেখানেও বহু তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
শুনানি শেষে সহগলের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা বলেন, “গরু পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বড় গরুগুলো ছোট গরু দেখিয়ে কিনতেন। কিন্তু গরুকে যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার করাত এনামুল, তার প্রমাণ কী করে হয়!’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আর গরু যদি আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে পাচার না হয়ে থাকে তা হলে এঁরা কী ভাবে গ্রেফতার হলেন। গরু পাচারের দিক থেকে সরে এসে এখন কার পকেটে কত টাকা গিয়েছে, সে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। কিন্তু আন্তর্জাতিক সীমান্ত করে গরু পাচার হত কি না, সে বিষয়ে কোনও তথ্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা দিতে পারেননি।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘যখন সহগলের চার্জশিট জমা পড়ে গিয়েছে, তখন ‘কাস্টডি ট্রায়াল’ কেন হচ্ছে না।’’