—নিজস্ব চিত্র।
একটি পথ দুর্ঘটনার আহত হয়েছেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষীর চালক। মঙ্গলবার রাতে ওই ঘটনায় এক শিশু-সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত শিশু অনুব্রতের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের কন্যা। প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় আপাতত সিবিআই-অনুব্রত টানাপড়েন চলছে। ওই মামলায় সায়গলকেও সিবিআইয়ের জেরার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
অনুব্রতের দেহরক্ষী সায়গল মঙ্গলবার রাতে দুর্গাপুর থেকে গাড়িতে সপরিবার বাড়ি ফিরছিলেন। বীরভূমের ইলামবাজার থানা এলাকায় রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় মারা যায় সায়গলের ছ’বছরের কন্যা। মৃত্যু হয়েছে গাড়ির আরও এক আরোহীর। আহতও বেশ কয়েক জন। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে বলে অসমর্থিত সূত্রের খবর। পুলিশ ওই বিষয়টি নিয়ে সরকারি ভাবে কিছু জানায়নি। তবে এটি নিছকই দুর্ঘটনা? না এর পিছনে কোনও চক্রান্ত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ-প্রশাসন। এই দুর্ঘটনা নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অতি শীঘ্রই চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতের ওই দুর্ঘটনায় সায়গলের কন্যার সঙ্গেই মাধব নামে মধ্যচল্লিশের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন সায়গলের গাড়ির চালক। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। রাতে দুর্গাপুর থেকে দু’টি গাড়িতে করে কন্যা-সহ কয়েক জনের সঙ্গে বীরভূমে ফিরছিলেন সায়গল। ইলামবাজারের চৌপাহাড়ি জঙ্গল এলাকায় তাঁদের একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি ডাম্পারে সজোরে ধাক্কা মারে। তবে পিছনের গাড়িতে থাকায় বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যান সায়গল। তাঁর প্রাণের আশঙ্কা নেই বলেই প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছে। যদিও তাঁর গাড়ির চালকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতে সাড়ে ১২টার কাছাকাছি ইলামবাজারের এই দুর্ঘটনা হয়। একটি বাচ্চা-সহ দু’জন মারা গিয়েছেন। আহত গাড়ির ড্রাইভার চিকিৎসাধীন। তবে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। গাড়ির স্পিড বেশি থাকায় দুর্ঘটনা হয়েছে।’’
ওই দুর্ঘটনার খবর জানাজানি হতেই ‘চক্রান্ত’-এর তত্ত্ব নিয়েও নাড়াচাড়া শুরু হয়েছে। কারণ, আহত সায়গল স্বয়ং অনুব্রতের দেহরক্ষী। গরুপাচার মামলায় তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রতকে তলব করলেও সিবিআইয়ের দফতরে এখনও পর্যন্ত হাজিরা দেননি তিনি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শে বিশ্রামে রয়েছেন। তার আগে তিনি ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। তবে কিছু দিন আগে অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গলকে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তার পরেই এই দুর্ঘটনা কি কাকতালীয়, নাকি এর পিছনে কোনও চক্রান্ত রয়েছে, তা-ই তদন্ত করে দেখা হবে বলে সূত্রের দাবি। পাশাপাশিই তদন্ত হবে গাড়ি থেকে উদ্ধার-হওয়া ওই টাকা নিয়েও। যদি সত্যিই ১০ লক্ষ নগদ টাকা উদ্ধার হয়ে থাকে, তা হলে তা সায়গলদের কাছে কোথা থেকে এল, তা-ও তদন্তের আওতায় পড়তে পারে।