অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে বিদ্যুৎবরণ গায়েন। ফাইল চিত্র।
তিনি তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত। গরু পাচার মামলায় তাঁর দিকেও নজর রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের। সম্প্রতি বোলপুরের কালিকাপুরের বাসিন্দা সেই বিদ্যুৎবরণ গায়েনের বাড়িতে তল্লাশিও চালিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। এরই মাঝে শুক্রবার বোলপুর পুরসভার কর্মী বিদ্যুৎবরণের নামে থাকা বোলপুরের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক জমির খোঁজ মিলল।
সরকারি তথ্য থেকেই জানা যাচ্ছে, বিদ্যুৎবরণ এবং অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল দু’টি কোম্পানির জয়েন্ট ডিরেক্টর। এর পাশাপাশি বিদ্যুৎবরণের নামে বল্লভপুর, কালিকাপুর, বোলপুর, সুরুল, জলজলিয়া প্রভৃতি এলাকায় প্রচুর জমি রয়েছে। এর মধ্যে কালিকাপুর মৌজা এলাকাতে ৫৭টি জমি। এ ছাড়াও বোলপুর মৌজায় ২টি, সুরুল মৌজায় ২টি, বল্লভপুর মৌজায় ৭টি, কঙ্কালীতলা এলাকার জলজলিয়া মৌজায় ৪টি জমি রয়েছে বলে ওই সূত্রের দাবি। এই সমস্ত জমি ২০২০ ও ২০২১ সালের মধ্যে কেনা হয়েছে। সব মিলিয়ে এই দু’বছরে ৫৬০ কাঠা জমি বিদ্যুৎবরণের নামে কেনা হয়েছে বলে সরকারি তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পুরসভার এক কর্মী কী ভাবে এত জমি কিনলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিদ্যুৎবরণের বাড়ি বোলপুরের যে এলাকায়, সেই কালিকাপুরের বাসিন্দাদের একাংশ বলছেন, “ওঁর এত সম্পত্তি কী করে হল, সেটা আমাদের কাছেও বিরাট ধাঁধা।’’ অনুব্রতের বিশেষ ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদেই এ জিনিস সম্ভব হয়েছে কি না, এত জমি কেনার অর্থ কোথা থেকে এসেছে— এ সবই এখন সিবিআইয়ের নজরে। কয়েক দিন আগেই বোলপুরে জমি রেজিস্ট্রি অফিসে তল্লাশি চালিয়ে এই বিদ্যুৎবরণের নামে একাধিক সম্পত্তির হদিস পান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা।
সিপিএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “এরা এত দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত যে দু’নম্বরি টাকা রাখার জায়গা নেই। তাই নামে-বেনামে প্রচুর জমি কিনে রেখেছে। আমরা চাই এই সমস্ত কিছুর তদন্ত হোক।’’ বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অষ্টম মণ্ডলের দাবি, ‘‘সঠিক তদন্ত হলে আরও সম্পত্তির হাদিস মিলবে।’’ এ দিন বিদ্যুৎবরণের অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। পুরসভায় তাঁর খোঁজ মেলেনি, মোবাইলও বন্ধ। জেলা তৃণমূলের কোনও নেতাও কিছু বলতে চাননি।