ইলামবাজারে তৃণমূলের জনসভায়। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
দল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া নেতানেত্রীদের চড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘এটা গাছের পাতা ঝরার সময়, তাই একসঙ্গে পাতা ঝরছে। আবার যখন গাছের পাতা বেরোবে তখন একসঙ্গে পাতা বের হবে।’’ রবিবার ইলামবাজারেরর ফুটবল ময়দানের জনসভা থেকে দলবদলুদের তীব্র কটাক্ষ করেন অনুব্রত। তিনি বলেন, ‘‘গাছের যে সমস্ত পাতা শুকিয়ে যায় সেই সমস্ত পাতা এই সময় মাটিতে ঝরে পড়ে। তাদের কোনও দাম থাকে না। তাই কে গেল, কে এল এই দলে তা নিয়ে কিছু এসে যায় না। এই দলের একটাই নেত্রী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’
এ দিনের সভা থেকে এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেও বিঁধেছেন অনুব্রত। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি সরকার শুধু মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে জানে, আজ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য তারা কিছু করেনি। পরিযায়ী শ্রমিকেরা যখন পায়ে হেঁটে ঘরে ফিরছিলেন তখন তাদের জন্য জল ও খাবারের ব্যবস্থাটুকু করেনি ওরা। অথচ আজ দল ভাঙানোর জন্য দিল্লি থেকে বিমান পাঠিয়ে দিল।’’ দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ‘‘আপনারা যেমন দলের কর্মী, আমিও সেরকম আপনাদের মতোই একজন দলের কর্মী। আমি কোনও নেতা নই। এ বারের ভোট ভয়ঙ্কর ভোট। অনেকে প্রলোভন দেখাবে, বাড়িতে বাড়িতে টাকাও দেবে। টাকা নিয়ে নেবেন কিন্তু ভোটটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেবেন। না হলে বাংলার ক্ষতি হবে।’’
সাম্প্রতিক কয়েকটি সভার মতোই এ দিনও অনুব্রতর মুখে শোনা গিয়েছে ‘ভয়ঙ্কর খেলা’র কথা। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে তিনি বলেন, ‘‘খেলা হবে। ভয়ঙ্কর খেলা হবে। এই মাটিতেই খেলা হবে। এই বাংলাতেই খেলা হবে। খেলতে আমরা ভাল জানি। এই খেলার রেফারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই আমরা ভয় পাই না।’’ সভার শেষে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন, বিজেপি বলছে খেলা আমরা শেষ করব। তার উত্তরে অনুব্রতর জবাব, ‘‘পারবে না। খেলা যখন আমি শুরু করেছি, খেলা আমিই শেষ করব। বিজেপির লোক কোথায়? বিজেপির যিনি জেলা সভাপতি, জানেন তার বিরুদ্ধে চিটিংবাজির মামলা আছে। লোকের কাছে টাকা নিয়েছে। গ্রেফতারও হয়েছিল। সে আবার খেলবে? পারবে না খেলতে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা অনুব্রতকে কটাক্ষ করে পাল্টা বলেন, ‘‘উনি যে হাজার হাজার ছেলেমেয়েদের চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছেন তার থেকে বড় চিটফান্ড আর কি হতে পারে? উনি যেন ভাল করে খবর নেন আমার বিরুদ্ধে ওঠা চিটফান্ডের মামলাটি থেকে ইতিমধ্যেই আদালত আমাকে রেহাই দিয়েছে। আগামী দিনে মানুষ এই সব কথার জবাব দেবে।’’
এদিনের সভায় জেলা সভাপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল-সহ অনেকে। ইলামবাজারে তৃণমূলের জনসভার পাশাপাশি এ দিন বোলপুর মহকুমা এলাকার রূপপুর , সাত্তোর অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় হাজার খানেকের উপর বাইক নিয়ে মিছিল করেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা।