Anubrata Mondal

জেলেও কেষ্টর মুখে ‘চড়াম চড়াম’, ‘উন্নয়ন দাঁড়িয়ে রাস্তায়’, কয়েদিদের বলছেন তৃণমূলের ভবিষ্যৎ

কারারক্ষীদের একটি সূত্রের দাবি, অন্য বন্দিদের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে আলোচনায় অনুব্রত দাবি করেছেন, তিনি জেলের ভিতরে আছেন কি বাইরে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তার কোনও প্রভাব পড়বে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২২ ২০:৫৫
Share:

জেলে অন্য বন্দিদের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা অনুব্রতের। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজে জেলবন্দি থাকলেও আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে তাঁর দলই জিতবে। জেল থেকেই সেই ব্যবস্থা করবেন তিনি। কারারক্ষীদের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, আসানসোল সংশোধনাগারে অন্য কয়েদিদের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে আলোচনায় এ সবই বলেছেন অনুব্রত মণ্ডল। ওই সূত্রের দাবি, জেলে বসেও নিজের ‘বুলি’ আউড়ে যাচ্ছেন অনুব্রত। ‘চড়াম চড়াম’, ‘রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে’-এর মতো শব্দবন্ধ প্রয়োগ করছেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। এখানেই শেষ নয়, ওই সূত্রটির আরও দাবি, জেলেও তৃণমূল নেতা ‘সংগঠন’ করছেন। গরিব কয়েদিদের জামিন পেতে সাহায্য করছেন তিনি।

Advertisement

গরু পাচার মামলায় আসানসোল সংশোধনাগারে জেল হেফাজতে রয়েছেন অনুব্রত। শারীরিক অসুস্থতার জন্য তাঁকে জেলের হাসপাতালে রাখা হয়েছে। সেখানে কয়েক জন বন্দির সঙ্গে থাকেন তৃণমূল নেতা। মাঝেসাঝে তাঁর সঙ্গে দেহরক্ষী সহগল হোসেনের সঙ্গেও কথাবার্তা হয়। সহগলও গরু পাচার মামলায় আগেই গ্রেফতার হয়ে আসানসোল সংশোধনাগারে জেল হেফাজতে রয়েছেন। জেল সূত্রে খবর, জেলে অন্য কয়েদিদের সঙ্গে ‘গল্পগুজব’ করে অনুব্রতের সারা দিন কাটে। তাঁদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। বেশির ভাগ সময়েই আলোচনার বিষয় হয়— রাজনীতি। জেল কর্তৃপক্ষের এ প্রসঙ্গে মন্তব্য, অনুব্রত এক জন রাজনীতিক। রাজনীতি ছাড়া আর কী নিয়েই বা কথা বলবেন।

কারারক্ষীদের একটি সূত্রের দাবি, অন্য বন্দিদের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে আলোচনায় অনুব্রত দাবি করেছেন, তিনি জেলের ভিতরে আছেন কি বাইরে, তাতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও প্রভাব পড়বে না। জেলে বসেই তিনি নিজের দলের জয় নিশ্চিত করবেন। এ সব বলতে গিয়ে তাঁর মুখে শোনা যাচ্ছে, ‘চড়াম চড়াম ঢাক বাজবে’, ‘রাস্তায় উন্নয়ন দেখা যাবে’। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘পুলিশকে বোম মারুন’ মন্তব্য করে রাজ্য-রাজনীতিতে প্রচারের আলোয় উঠে এসেছিলেন অনুব্রত। তার পর থেকে পরের ৯ বছরে ‘উস্কানি’ ও ‘হুমকি’ দেওয়ার দৌলতে বার বার শিরোনামে উঠে আসেন তিনি। কখনও ‘রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড় করিয়ে রাখা,’ কখনও ‘গুড় বাতাসা’, কখনও ‘চড়াম চড়াম ঢাক বাজবে’।

Advertisement

জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু হাসপাতাল কক্ষের বন্দিদের সঙ্গেই নন, সংশোধনাগারের অন্য বন্দিদের সঙ্গেও দেখা করেন অনুব্রত। মূলত অন্য বন্দিরাই আসেন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। তাঁদের সুখ-দুঃখের কথা বলতে। অনেক বন্দি ৫০০-১০০০ টাকার জন্য জামিন পান না। তাঁদের অনেকেই সেই বিষয়ে তৃণমূল নেতার কাছে সাহায্য চান। অনুব্রতও তাঁদের সাহায্য করার চেষ্টা করেন। এই কাজে অনুব্রতকে সহগলও সাহায্য করেন বলেই দাবি করেছেন কারারক্ষীদের ওই সূত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement