ঠাকুরদা ছিলেন হিন্দি ফিল্মজগতের খ্যাতনামী অভিনেতা। তরুণীর বাবা এবং জেঠুও হিন্দি ছবিতে কাজ করেছেন। কিন্তু তরুণীর ভাগ্য সেখানে খোলেনি। বরং অভিনয় ছেড়ে তিনি ব্যবসায় মন দিয়েছেন। তবে সৌন্দর্যের দিক থেকে কোনও বলি অভিনেত্রীর চেয়ে কম যান না মুসকান গোস্বামী।
শুক্রবার সকালে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে প্রয়াত হন হিন্দি চলচ্চিত্রজগতের বর্ষীয়ান অভিনেতা মনোজ কুমার। জানা গিয়েছে, বার্ধক্যজনিত একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন ৮৭ বছরের অভিনেতা। একসময় যিনি দেশভক্তির জন্য ‘ভারত কুমার’ নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন, তাঁরই নাতনি মুসকান।
শশী গোস্বামী নামে এক তরুণীর প্রেমে পড়েছিলেন মনোজ। বহু বছর সম্পর্কে থাকার পর দীর্ঘকালীন প্রেমিকা শশীকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। বিয়ের পর দুই পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন শশী। তাঁর দুই পুত্রসন্তানের নাম যথাক্রমে কুণাল গোস্বামী এবং বিশাল গোস্বামী।
মনোজের কনিষ্ঠ পুত্র বিশালের কন্যা মুসকান। দিল্লির কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর মনোজ অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়ার দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। ষাট-সত্তরের দশকে একের পর এক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
আশির দশকে মনোজের কেরিয়ারের রেখচিত্র নিম্নমুখী হতে শুরু করেছিল। তাঁর কোনও ছবিই বক্স অফিসে ব্যবসা করতে পারছিল না। তার পর তিনি নিজেই অভিনয়জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
পিতার ব্যর্থতা দেখে বিচলিত হননি কুণাল এবং বিশাল। তাঁরাও বলিপাড়ার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছিল। একই পথে হাঁটা শুরু করেছিলেন মুসকানও। ভুল বুঝতে পেরে সরে গিয়েছিলেন তিনি।
মুসকানের পিতা বিশালের অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল না। ক্যামেরার পিছনে থাকতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করতেন তিনি। ‘কলিযুগ অওর রামায়ণ’, ‘জয় হিন্দ’, ‘ক্লার্ক’— একাধিক ছবির প্রযোজনার দায়িত্ব সামলেছিলেন বিশাল। কন্যা মুসকানকেও নিজের ছবিতে কাজের সুযোগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আখেরে তাতে কোনও লাভ হয়নি।
১৯৮৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ক্লার্ক’ ছবির পরিচালক ছিলেন মনোজ। পরিচালনার পাশাপাশি এই ছবিতে অভিনয়ও করেছিলেন তিনি। এই ছবির প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন বিশাল। কানাঘুষো শোনা যায়, এই ছবিতেই ছোট্ট একটি চরিত্রে প্রথম অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল মুসকানকে।
পরিবারের সকলে চলচ্চিত্রজগতের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও অন্য পথে হাঁটতে শুরু করেন মুসকান। ফ্যাশনের প্রতি আগ্রহ থাকায় তা নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। জনপ্রিয় পোশাকশিল্পী মণীশ মলহোত্রের সহকারী হিসাবেও নাকি কাজ করেছেন মনোজের নাতনি।
ব্যবসা করে কেরিয়ার গড়বেন বলে নিজস্ব সংস্থা গড়ে তোলেন মুসকান। পোশাক প্রস্তুতকারী একটি সংস্থা রয়েছে তাঁর।
২০২১ সালে কোভিড অতিমারির মধ্যেই বিয়ে সেরে ফেলেন মুসকান। তাঁর স্বামীও অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত নন। মুম্বইয়ের এক ব্যবসায়ী তিনি।
মুসকানের স্বামীর নাম নিখিল ওহরি। নিজস্ব সংস্থা থাকার পাশাপাশি নিখিলের সঙ্গে যৌথ ভাবে ব্যবসা শুরু করেছেন মুসকান। সুগন্ধি মোমবাতি প্রস্তুতকারী এক সংস্থার মালকিন মুসকান।
সম্প্রতি কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন মুসকান। কন্যা এবং স্বামীকে নিয়ে মুম্বইয়ে থাকেন তিনি। সমাজমাধ্যমেও অনুরাগীমহল তৈরি হয়েছে মুসকানের। ইতিমধ্যেই ইনস্টাগ্রামের পাতায় তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ২৭ হাজারের গণ্ডি পার করে ফেলেছে।