মঙ্গলকোটে সভায় যোগ। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘদিন ধরে তিনি ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের তিন বিধানসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক। কিন্তু সম্প্রতি তৃণমূল এই পর্যবেক্ষক পদ তুলে দিয়েছে। তার পরেও মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ও আউশগ্রামের দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার ‘ভার্চুয়াল’ সভা করলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এ নিয়ে চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে ওই তিন এলাকায় তৃণমূলের অন্দরে।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ৪ জুলাই তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ দলের নেতাদের নিয়ে ‘ভার্চুয়াল সভা’ করেন। কিন্তু জেলার ওই তিনটি বিধানসভা এলাকার নেতৃত্বকে সেই বৈঠকে যোগ দিতে ডাকা হয়নি। এ দিন ওই তিন এলাকার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আগামী বিধানসভা ভোটে দলের রণকৌশল নিয়ে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠক করেন অনুব্রত।
বিকেল ৪টে নাগাদ শুরু হওয়া ওই বৈঠকে যোগ দেন কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ, আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার, দলের মঙ্গলকোট ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী, কেতুগ্রাম ১ ও ২ ব্লকের সভাপতি তরুণ মুখ্যোপাধ্যায় ও বিকাশ মজুমদার এবং আউশগ্রাম ১ ও ২ ব্লকের সভাপতি শেখ সালেক রহমান ও রামকৃষ্ণ ঘোষ, গুসকড়া শহর সভাপতি কুশল মুখ্যোপাধ্যায়েরা। তিন বিধানসভা এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান ও অঞ্চল সভাপতিদেরও ডাকা হয়েছিল। তৃণমূল সূত্রের খবর, অনুব্রত জানিয়েছেন, এই তিনটি কেন্দ্রে লড়াই কঠিন। প্রতিটি বুথে ৪০ জনের কমিটি করতে হবে, যেখানে ৩০ জন পুরুষ ও ১০ জন মহিলা থাকতে হবে। তিনি এক-এক দিন এক-একটি এলাকায় গিয়ে তিনটি করে অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন।
পর্যবেক্ষক পদে না থাকা সত্ত্বেও অনুব্রতর বৈঠক করা নিয়ে মঙ্গলকোটের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘দলের গঠনতন্ত্র কে মানবেন আর কে মানবেন না, তা তাঁর ব্যাপার। ৪০ বছর পরে সিপিএমকে হারিয়ে এখানে আমি জিতেছি। পেশিশক্তি দিয়ে কাজ হবে না, মঙ্গলকোটে জিততে হলে এ বার মানুষের মন জয় করতে হবে।’’ মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ববাবুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘যিনি এলাকাতেই আসেন না তিনি কী করে মানুষের মন বুঝবেন? আমরা কেষ্টদার (অনুব্রত) নেতৃত্বে ছিলাম, আছি এবং থাকব। তিনি শীঘ্রই বুথ কমিটির সঙ্গে বসবেন বলে জানিয়েছেন।’’ কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ বলেন, ‘‘অনেকে ভেবেছিলেন, পর্যবেক্ষক পদ বিলুপ্ত হওয়ায় হয়তো কেষ্টদার নেতৃত্ব খর্ব হল। তা ঠিক নয়।’’
অনুব্রত বলেন, ‘‘আমি দলের তরফে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছি। ওই তিন এলাকা সেই কেন্দ্রের অধীনে রয়েছে, তাই বৈঠক করেছি। পর্যবেক্ষক হিসেবে বৈঠক করিনি।’’ ওই তিন এলাকায় দলের তরফে নবনিযুক্ত কো-অর্ডিনেটর সুভাষ মণ্ডলের সঙ্গে এ দিন বারবার চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি মেসেজেরও। দলের রাজ্য স্তরের মুখপাত্র দেবু টুডু শুধু বলেন, ‘‘এটি দলের বিষয়। রাজ্য নেতৃত্ব দেখছেন।’’