অনুব্রত মণ্ডল ও সুকন্যা মণ্ডল।
গরু পাচার মামলায় গত সপ্তাহেই অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। সেখানে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতিকে ‘অন্যতম প্রধান চক্রান্তকারী’ বলে দাবি করে তাঁকে বিপুল সম্পত্তির মালিক বলেও ব্যাখ্যা করা হয়। অনুব্রতের জমা দেওয়া আয়করের তথ্যও জুড়ে দেওয়া হয়েছে চার্জশিটে। আদালতের হাতে ওই তথ্য তুলে ধরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, আট বছরে অনুব্রতের আয় প্রায় ১৭৯৫ শতাংশ বেড়েছে। তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের আয় বৃদ্ধির পরিমাণ ২৯৬৪ শতাংশ। সেটাও ওই ৮ বছরে। অনুব্রতের প্রয়াত স্ত্রী ছবি মণ্ডলের বার্ষিক আয় বৃদ্ধির তথ্যও দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে।
অনুব্রতকে গ্রেফতারের ৫৭ দিনের মাথায় গত ৭ অক্টোবর জমা দেওয়া চার্জশিটে সিবিআইয়ের দাবি, ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৩৭ টাকা। ২০২১-’২২ বর্ষে সেই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ১ লক্ষ ৩ হাজার ৬৬৪ টাকায়। অর্থাৎ, গত ৮ বছরে তাঁর আয়বৃদ্ধি ৯৫ লক্ষ ৭০ হাজার ৬২৭ টাকা। তবে কোনও কোনও বছরে বার্ষিক আয় কমেছেও। যেমন ২০১৮-’১৯ বর্ষে অনুব্রতের বার্ষিক আয় যেখানে ৫০ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৩৭ টাকা, সেখানে ২০১৯-’২০ বর্ষে তা কমে দাঁড়ায় ৪৯ লক্ষ ৮৮ হাজার ৫৫১ টাকা। সুকন্যার বার্ষিক আয়ের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ২০১৩-’১৪ বর্ষে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ৩ লক্ষ ৯ হাজার ৩৯৯ টাকা। ২০২১-’২২ বর্ষে তা বেড়ে হয় ৯২ লক্ষ ৯৭ হাজার ৬০০ টাকা। অর্থাৎ, বৃদ্ধির পরিমাণ ৮৯ লক্ষ ৯৪ হাজার ২০১ টাকা। তবে আগের বর্ষে অর্থাৎ, ২০২০-’২১ বর্ষে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ১ কোটি ৪৪ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯০ টাকা।
২০২০ সালে অনুব্রতের স্ত্রী ছবি মণ্ডলের মৃত্যু হয়। তাই ওই অর্থবর্ষ পর্যন্তই তাঁর বার্ষিক আয়ের হিসাব দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ২০১৩-’১৪ বর্ষে ছবির বার্ষিক আয় ছিল ৪ লক্ষ ৪৫ হাজার ২৬০ টাকা। যা ২০২০-’২১ বর্ষে বেড়ে হয় ৬১ লক্ষ ১১ হাজার ৯৭০ টাকা। ওই ৭ বছরের মধ্যে মাঝের ২০১৬-’১৭ বর্ষে ছবির বার্ষিক আয় সর্বোচ্চ ছিল— ৯৫ লক্ষ ৯৬ হাজার ৫২ টাকা। ৮ বছরে সব মিলিয়ে অনুব্রতের পারিবারিক আয় বৃদ্ধি ঘটেছে ১ কোটি ৮১ লক্ষ ১৯ হাজার ৫৬৮ টাকা। হিসাব মতো প্রায় ১৪১৪ শতাংশ।