অসুস্থ শরীরেও আত্মবিশ্বাসী অনুব্রত, জানালেন তাঁর আইনজীবী।
প্রাক্ স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের অনুষ্ঠানে গিয়ে তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতেই ‘আত্মবিশ্বাস’ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের। সোমবার বীরভূমের ওই তৃণমূল নেতার সঙ্গে দেখা করার পর এমনটাই দাবি করেছেন তাঁর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল অত্যন্ত অসুস্থ। যদিও অসুস্থতার মধ্যেও তিনি এখন অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।
রবিবার যেখানে দাঁড়িয়ে অনুব্রতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা, ঘটনাচক্রে সেটি ছিল গ্রেফতার হওয়া আর এক তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পশ্চিম। অনুব্রতের প্রশংসা করলেও, রবিবার পার্থ সম্পর্কে প্রায় নীরব ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলনেত্রী আগে বলেছিলেন, ‘আইন আইনের পথে চলবে’। এর আগে দলের তরফেও একই বার্তা দেওয়া হয়েছিল। তা ছাড়া আর একটি মন্তব্যও করেননি মুখ্যমন্ত্রী। যদিও সেখানে দাঁড়িয়েই বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রতের পাশে থাকার বার্তা দেন মমতা। তিনি জানিয়েছিলেন, অনুব্রত কিছুই চায় না। এমনকি, তিনি রাজ্যসভায় পাঠাতে চাইলেও ‘কেষ্ট’ রাজি হননি।
অনুব্রতের আইনজীবীও সোমবার দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেল নির্দোষ। দলনেত্রীর বার্তা পেয়ে তাঁর মক্কেলের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। অনির্বাণ বলেন, ‘‘উনি জেনেছেন যে, দলনেত্রী ওঁকে সমর্থন করেছেন। তাতে ওঁর আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। উনি বলেছেন, আমি জানতাম দিদি আমার পাশে এসে দাঁড়াবেন। আমাকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার সঙ্গে কোনও ভাবে এই ঘটনার যোগ নেই।’’
এর আগে আদালতেও অনির্বাণ দাবি করেছিলেন, তাঁর মক্কেলের সঙ্গে গরুপাচারের কোনও যোগ নেই। রবিবার মমতা ওই একই দাবি করে অভিযোগের আঙুল তোলেন সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র দিকে। সোমবার অনুব্রতের আইনজীবীর গলায় আবার শোনা গেল সেই সুর। তিনি বলেন, ‘‘গরুপাচারের সঙ্গে ওঁর কোনও সম্পর্ক নেই। গরুপাচার যদি হয়েও থাকে, সেটা সীমান্তের ও পারে গিয়েছে। সীমান্তের ও পারে গরু গেলে সেটাই অপরাধ। আর সীমান্ত পাহারার দায়িত্বে থাকে কেন্দ্রীয় সংস্থা বিএসএফ, শুল্ক দফতর। এফআইআরেও বলা হয়েছে, আবগারি দফতরের অফিসারেরা এর সঙ্গে যুক্ত। তা সত্ত্বেও এর আগে মাত্র এক জন শুল্ক আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি ৩২ দিনের মাথায় জামিন পান। অথচ অনুব্রতকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
এর আগেই অনুব্রতের আইনজীবীরা আদালতে একই দাবি করেছিলেন। সোমবার অনির্বাণ বলেন, ‘‘আমরা আগেও আদালতে বলেছি। সেই একই কথা উঠে এসেছে ওঁর দলনেত্রীর কথায়। তাতেই উনি আত্মবিশ্বাসী। উনি বলেছেন, ‘এটাই কাম্য ছিল। আমি জানতাম, দিদি বুঝতে পারবেন, আমি কোনও অন্যায় করিনি। আমি কোনও ভাবে এই অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত নেই।’ ওঁর শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তার মধ্যে ওঁকে আত্মবিশ্বাসী শোনাল।’’