কথার মাঝে। শুক্রবার নলহাটিতে তৃণমূলের সভায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মীরা প্রথমটায় চমকে উঠেছিলেন! বলছেন কি কেষ্ট মণ্ডল (জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত)? গোষ্ঠী-কোন্দলের কথা শেষমেষ মেনেই নিলেন নাকি? নাহ্। ভুল ভাঙল কিছু পরে। খানিক পরে অনুব্রত সে ব্যাপারটা খোলসা করে দিলেন। বারবরের মতো দোষ চাপালেন সেই বিরোধীদের ঘাড়েই।
শুক্রবার নলহাটি ২ ব্লকে মহিলা কর্মীদের নিয়ে সম্মেলন ছিল তৃণমূলের। সেখানে বক্তব্য রাখতে উঠে শুরুতেই অনুব্রত বলে বসেন— ‘‘আমি জানি আজকের কর্মী সম্মেলনে অনেক নেতা আসতে মানা করেছেন। তাঁরা দলের শত্রু। তাঁরা দলের ভাল চান না। এঁদের ব্যাপারে ভোটের পরে চিন্তা ভাবনা করব।’’ দলের গোষ্ঠী কোন্দলের কথা বলতে চাইছেন ধরেই নিয়েই কর্মীরা মুখ চাওয়া-চাইয়ি শুরু করেন। মঞ্চ থেকে নামতেই ঘিরে ধরেন সাংবাদিকেরা। তখনই বেঁকে বসেন অনুব্রত। সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘‘দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বলতে চাইনি তো! বলেছি ওঁদের আসতে সিপিএমও মানা করতে পারে, কংগ্রেসও পারে!’’
এ দিকে তাঁদের বিরুদ্ধে তৃণমূলের মহিলা কর্মীদের সম্মেলনে আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে শুনে বিষ্মিত কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারা। নলহাটি ২ ব্লকের এক সিপিএম নেতার প্রশ্ন, ‘‘বাধা দেওয়ার প্রশ্নই নেই। আসলে নিজের মুখে দলের দ্বন্দ্বের কথা মেনে নিয়েও ওকে ঢোক গিলতে হয়েছে।’’ এলাকায় তৃণমূলের সংগঠন ভাল নয় বলে দাবি করেছেন সিপিএমের লোহাপুর জোনাল সম্পাদক আবদুস সালাম। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এলাকার মহিলাদের যাতায়াতের খরচ দিয়ে, টিফিন দিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরেও তেমন লোক হয়নি। সে সব দেখে আজেবাজে বকছেন অনুব্রত।’’ সদ্য ঘোষিত কংগ্রেস প্রার্থী মিলটন রসিদও মনে করছেন দলের দ্বন্দ্ব মুখে কবুল করে পরে সামলে নিতে বিরোধীদের ঘা়ড়ে দায় ঠেলছেন!
এ দিনের সম্মেলনে ছিলেন হাঁসন বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী অসিত মাল, জেলার মহিলা সভানেত্রী ফাল্গুনী সিংহ, দলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিত সিংহ, নলহাটি ২ ব্লক সভাপতি বিভাস অধিকারী, জেলা নেতা মহম্মদ গিয়াসউদ্দিন, ব্লক নেতৃত্ব কুদরেতা খোদা-সহ অনেকেই।