অর্জুনের টুইট
জল্পনা ছড়িয়েছে, রবিবারই দলবদল করতে পারেন অর্জুন সিংহ! শনিবার থেকে সেই জল্পনা ছড়ায় নেটমাধ্যমে। সেই জল্পনার মাঝে রবিবার সকালে একটি টুইট করলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ। লিখলেন, ‘যাঁরা আমার সমালোচনা করছেন, তাঁরা নিজেকে আগে যাচাই করুন, আত্মবিশ্লেষণ করুন।’ তাঁর এমন টুইটের পর কটাক্ষের শিকার হয়েছেন গেরুয়া শিবিরের এই সংসদ। অর্জুনের হেঁয়ালিসুলভ টুইট রাজ্য রাজনীতিতে এখন আর নতুন বিষয় নয়। পাটের মূল্য নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে তার সঙ্ঘাতের ঘটনা থেকেই ধারাবাহিকভাবে ইঙ্গিত করে আসছেন অর্জুন। তাই রবিবার সকালের তাঁর এই টুইটটিকে খুব বেশি আমল দিতে চাইছে না বাংলার রাজনীতির কারবারিরা। কারণ, অর্জুন সাফ জানিয়েছেন, তিনি দলবদল করলে তা প্রকাশ্যেই করবেন। কোনও রাখঢাক করবেন না। তাই বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে অর্জুন দলবদলের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না।
শনিবারও বিজেপি সাংসদের একটি টুইট ঘিরে দলবদলের জল্পনা জোরালো হয়েছিল। কিন্তু, সেই জল্পনায় জল ঢেলে অর্জুন স্বয়ং জানিয়ে দেন, তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন না তিনি। আনন্দবাজার অনলাইন-কে তিনি বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূলের বেশ কিছু নেতাকর্মী আমার ছবি দিয়ে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের কথা নেটমাধ্যমে প্রচার করে দিয়েছেন, যা একেবারেই অসত্য।’’
দলীয় সূত্রে খবর, অর্জুনের দলবদল নিয়ে তৃণমূলের অন্দরমহলে দু’রকমের মত রয়েছে। তৃণমূল শিবিরের একাংশ অর্জুনকে দলে নিতে ইচ্ছুক হলেও, ব্যারাকপুরের বর্তমান ক্ষমতাসীন শিবির আবার অর্জুনকে দলে নিতে চাইছে না। তবে দু’পক্ষের নেতাদের মতে, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চাইলে সহজেই ‘ঘর ওয়াপসি’ হতেই পারে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদের। সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের দুই শিবিরের ইচ্ছা-অনিচ্ছা গুরুত্বহীন হয়ে যাবে। তাই অর্জুন নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে নারাজ তৃণমূলের নেতারা।
তবে বিজেপি নেতৃত্ব এখনই অর্জুনকে নিয়ে আশা ছাড়তে নারাজ। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, অর্জুন সিংহের মতো নেতা ভালই বোঝেন, তাঁর গুরুত্ব কাদের কাছে বেশি। তিনি বিজেপি সাংসদ হয়েও পাট নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে পিছপা হননি এবং তাঁর মতামতকে দল ও সরকার যে ভাবে বিবেচনা করেছে, তাতে অর্জুনের গুরুত্ব বিজেপির কাছে কতটা, তা-ও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই তিনি এ সব দেখার পর দলবদল করবেন বলে বিজেপি নেতৃত্ব মনে করে না।
তবে রবিবার সকালে টুইট করে কটাক্ষের মুখে পড়েছেন ব্যারাকপুরের এই ‘বাহুবলী’ নেতা। কেউ রিটুইট করে লিখেছেন, ‘বাণী দেওয়া বন্ধ করে কালীঘাটে ঢুকে যান। এতো বাণী কিসের?’ কেউ বা লিখেছেন, ‘সিধি বাত নো বকোয়াস।’ আবার কেউ লিখেছেন, ‘আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন দাদা।’