Bikash Ranjan Bhattacharya

Bikash Ranjan Bhattacharya: ‘কেষ্ট-কন্যার বিরুদ্ধে আবার মামলা হবে’! তবে সুকন্যার হেনস্থা হয়েছে, মানছেন বিকাশ

অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা টেট পাশ না করেই স্কুলে চাকরি পেয়েছেন— এই অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২২ ১৩:৪৮
Share:

অনুব্রত-কন্যার বিরুদ্ধে ফের মামলা করা হবে বলে জানালেন আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।

তাঁর চাকরি স্বচ্ছ ভাবে হয়নি! এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডেকে পাঠানো এবং পরে আদালতের সেই নির্দেশ ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তে স্বস্তি পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল। তবে গোটা ঘটনায় অনুব্রত-কন্যাকে যে হেনস্থা হতে হয়েছে, তা শুক্রবার সন্ধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনের লাইভ অনুষ্ঠান ‘অ-জানাকথা’য় মেনে নিলেন আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। মামলার নথি গ্রাহ্য না হওয়ায় নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তার প্রেক্ষিতে বিকাশ জানালেন, ভবিষ্যতে আরও নথিপত্র জোগাড় করে পুনরায় মামলা করা হবে সুকন্যার বিরুদ্ধে।

Advertisement

অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা টেট পাশ না করেই স্কুলে চাকরি পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, স্কুলে না গিয়ে বাড়িতে বসে বেতন নিয়েছেন— অতিরিক্ত হলফনামায় এই অভিযোগ তুলে টেট মামলার সঙ্গে তা যুক্ত হয়। শুধু সুকন্যাই নন, অনুব্রতের ভাই, ভাইপো-সহ আরও পাঁচ ঘনিষ্ঠের বিরুদ্ধেও টেট পাশ না করে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার সকলকে টেট পাশের নথিপত্র সমেত আদালতে ডেকে পাঠান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তবে এজলাস শুরু হতেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, ওই অতিরিক্ত হলফনামা প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় গ্রহণ করা যাবে না। সুকন্যাদের বিরুদ্ধে যিনি মামলা দায়ের করেছেন, সৌমেন নন্দী নামে সেই মামলাকারীর বক্তব্য তুলে ধরে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, পরবর্তী কালে আবারও তাঁদের বিরুদ্ধে মামলায় দায়ের করা হবে। শুক্রবারের লাইভ অনুষ্ঠানে একই কথা জানালেন বিকাশও। তিনি বলেন, ‘‘সুকন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ করেনি আদালত। আদালত শুধু বলেছে, পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে। ভবিষ্যতে আরও নথিপত্র জোগাড় করে মামলা করা হবে।’’ প্রসঙ্গত, রাজ্যে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে উচ্চ আদালতে। বিকাশ সেই সব মামলার সঙ্গেই যুক্ত।

কিন্তু যে ভাবে একটি অতিরিক্ত হলফনামার ভিত্তিতে অনুব্রত-কন্যাকে আদালতে ডেকে পাঠানোর পর আগের হাজিরার নির্দেশ খারিজ করে দিলেন বিচারপতি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অনেকের দাবি, সুকন্যাকে হেনস্থা করা হয়েছে। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও বলেন, ‘‘আদালত ও আইনের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানিয়ে বলছি, যে হলফনামা এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার ভিত্তিতে তাঁদের (সুকন্যা-সহ ছ’জনকে) হাজিরা নিশ্চিত করতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হল, পরের শুনানিতে তা এতটা গুরুত্বহীন হয়ে গেল! নির্দেশই প্রত্যাহার করে নেওয়া হল! যাঁদের সম্পর্কে এই নির্দেশ দেওয়া হল, তাঁরা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও পেলেন না। যদি সামাজিক ভাবে অপদস্থ করার পরিস্থিতি তৈরি করা হয়, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’ ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার আদালত চত্বরে এক মহিলাকে সুকন্যার উদ্দেশে ‘গরু চোরের মেয়ে’ বলে কটূক্তি করতে শোনা যায়।

Advertisement

সুকন্যাকে হেনস্থার প্রশ্নে বিকাশের জবাব, ‘‘ওঁকে (সুকন্যাকে) যে ভাবে হেনস্থা হতে হল, তা দুর্ভাগ্যজনক। হেনস্থা হতে হয়েছে প্রকৃতপক্ষে ওঁর বাবার ক্রিয়াকর্মের জন্য। কিন্তু যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই ঘটনায় তিনি কেন অপমানিত হবেন? তিনি তো মাথা উঁচু করে বলবেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভুল।’’ সিপিএম নেতা বিকাশের সংযোজন, ‘‘আসলে দুর্নীতিতে হাত পড়লে স্বার্থে আঘাত লাগে। তখন এ রকম অনেকেরই মনে হয়।’’

তবে অপরাধীর পরিবার সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করার প্রবণতাকে মান্যতা দিলেন না বিকাশ। জনসাধারণের উদ্দেশে তাঁর আবেদন, ‘‘যিনি অপরাধ করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে বলুন। কিন্তু তাঁর পরিবার সম্পর্কে কেউ কোনও মন্তব্য করবেন না। এটা অসুস্থতার লক্ষণ। আপনারা প্রচারের আবহে মানসিক দিক থেকে অসুস্থ হয়ে পড়বেন না। প্রত্যেক মানুষকে প্রাপ্য মর্যাদা দিয়ে সম্মানজনক আচরণ করুন। তিনি যদি ভুল করে থাকেন, তাঁর ভুলের সমালোচনা করুন। কিন্তু সেটা ব্যক্তি পর্যায়ে নিয়ে যাবেন না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement