আবার প্যাঁচে অ্যাপোলো, রোগী মৃত্যুতে নেয়নি ব্যবস্থা

পাঁচ মাস আগে এক রোগিণীর মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়ল অ্যাপোলো হাসপাতাল।২৮ বছরের অন্তঃসত্ত্বা তরুণী আতিফা আকিফের বাড়ির লোকেরা তাঁর মৃত্যুর পরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন।

Advertisement

সোমা মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৭ ০৩:১০
Share:

মোজ আতিফা আকিফ

পাঁচ মাস আগে এক রোগিণীর মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়ল অ্যাপোলো হাসপাতাল।

Advertisement

২৮ বছরের অন্তঃসত্ত্বা তরুণী আতিফা আকিফের বাড়ির লোকেরা তাঁর মৃত্যুর পরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন। গাফিলতির কথা সেই সময় স্বীকারও করে নিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তারা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু কথা রাখেনি হাসপাতাল।

আতিফার পরিবারের লোকেরা জানাচ্ছেন, সেই সময় হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁদের সব কথোপকথন তাঁরা ভিডিওগ্রাফি করে রেখেছিলেন। আতিফার চিকিৎসকদের মধ্যে একজন নিজের যোগ্যতার বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন আর তাতেই বিপত্তি— হাসপাতালের এমন স্বীকারোক্তিও ওই ভিডিও ফুটেজে রয়েছে বলে দাবি আত্মীয়দের।

Advertisement

কেন দোষ স্বীকার করার পরেও অভিযুক্ত চিকিৎসকদের এত দিন ধরে আড়াল করে গেল হাসপাতাল, এ বার সেই প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁর স্বামী, আকিফ আমান সামসি। স্বাস্থ্য ভবনে সমস্ত ভিডিও ফুটেজ জমা দিয়েছেন তিনি। সেই ফুটেজের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করেছে স্বাস্থ্য ভবন।

আকিফার চিকিৎসার রেকর্ড থেকে দেখা যাচ্ছে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ডেঙ্গি হয়েছিল আতিফার। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরে হেপাটাইটিস ও এনসেফ্যালাইটিস ধরা পড়ে। পরে সেপসিস উইথ সেপটিক শক হয়। দু’ সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে মারা যান তিনি।

আরও পড়ুন: দেশের মধ্যে নারী ও শিশু পাচারের সংখ্যা সর্বাধিক পশ্চিমবঙ্গে!

স্বামী আকিফের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তির পরে প্রথমে ‘সব কিছু ঠিক আছে’ বলে আশ্বাস দেওয়া হলেও পরের দিন থেকেই নানা রকমের জটিলতার কথা বলা শুরু হয়। এমনকী প্রসবের নির্ধারিত সময় আরও এক মাস পরে থাকলেও নানা ঝুঁকির কারণ দেখিয়ে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন আতিফা। তার পরেই দ্রুত তাঁর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। স্ত্রীর মৃত্যুর পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘‘ডাক্তারদের একের পর এক ভুল সিদ্ধান্তেই আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বিল বাড়ানোর জন্য ওঁরা যা ইচ্ছা তাই করে গিয়েছেন!’’

আকিফ এই অভিযোগ আনার পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের ডেকে পাঠিয়ে নিজেদের ভুল স্বীকার করেন। ১৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বিলের মধ্যে দু’লক্ষ ৭০ হাজার টাকা মিটিয়েছিলেন আকিফ। বাকি টাকাটা মকুব করে দেওয়া হয়। আকিফের কথায়, ‘‘আমি তো টাকা কমাতে চাইনি। জন্ম থেকে আমার ছেলেটা মাকে পেল না। এর খেসারত হাসপাতালকে দিতেই হবে। আমি দোষীদের শাস্তি চাই।’’

কেন কোনও ব্যবস্থা নেননি অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ? তাঁরা জানান, ওটা পুরনো ঘটনা। এখন মনে করতে পারছেন না। সঞ্জয় রায়ের বিষয়টার নিষ্পত্তি হলে তবে পুরনো ফাইল ঘেঁটে বিস্তারিত জানাতে পারবেন। তার আগেই অবশ্য আদালতে যাচ্ছেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আকিফ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement