প্রতীকী ছবি।
হাঁসখালির পর এ বার নদিয়ারই ধানতলায় ১৪ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠল। তবে এ ক্ষেত্রে খুনের অভিযোগ দায়ের হলেও ধর্ষণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বা ওই সংক্রান্ত কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি বলে দাবি পুলিশের। ধর্ষণের অভিযোগ মূলত উঠেছে নেট মাধ্যমেই। তবে সেই অভিযোগ প্রসঙ্গে কিশোরীর পরিবারও কোনও মন্তব্য করেনি।
ঘটনাটি ঘটেছে ধানতলা থানার অন্তর্গত শঙ্করপুরের ঘোলা গ্রামে। বৃহস্পতিবার সেখানেই ১৪ বছরের এক কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত কিশোরীর পরিবার এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের করে। ধানতলা থানায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ অর্থাৎ খুনের ধারায় মামলাও রুজু করা হয়। কিন্তু পরে নেট মাধ্যমে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের একটি ফেসবুক পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। ওই পোস্টে সুকান্ত স্পষ্ট লিখেছেন, ‘হাঁসখালির ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। ... ১৪ বছরের নাবালিকা পিসির মেয়ের বাড়িতে চরক মেলা দেখতে গিয়ে ধর্ষিত হয়ে খুন হলো। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর শাসনে বাংলার নারীর কোনও সুরক্ষা নেই।’
মৃত কিশোরী নবম শ্রেণির ছাত্রী। বৃহস্পতিবার পিসির মেয়ের বাড়িতে চড়কের মেলা দেখতে এসেছিল সে। ওই দিন রাতেই দিদির ঘরের ভিতর তার ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায়।
পুলিশের ধারণা, বৃহস্পতিবার মেলা থেকে ফিরতে দেরি হওয়ায় ওই কিশোরীকে তার জামাইবাবু বকাবকি করেন। তাতেই অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয় মেয়েটি। যদিও কিশোরীর পরিবার এই ঘটনায় খুনের মামলা দায়ের করে। মেয়েটির দিদি, জামাইবাবু-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানানো হয় পুলিশের কাছে। পুলিশ ইতিমধ্যে মেয়েটির জামাইবাবু-সহ দুজনকে গ্রেফতারও করেছে। একই সঙ্গে জানিয়েছে, আত্মহত্যায় কোনও রকম প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিল কি না তা তদন্তে খতিয়ে দেখা হবে। তবে নেটমাধ্যমে ওঠা ধর্ষণের অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশ কোনও মন্তব্য করেনি।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই নদিয়ার ধানতলার ঘটনাটিকে ধর্ষণের ঘটনা বলে নেট মাধ্যমে প্রচার শুরু হয়। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির মতো অনেকেই ঘটনাটিকে হাঁসখালির ঘটনার পুনরাবৃত্তি বলে প্রতিবাদও শুরু করে দেন। সুকান্ত তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘একজন মহিলা পুলিশমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও বাংলার মা ও মেয়েদের কেন প্রতিনিয়ত ধর্ষিত হতে হয়? যে শাসক বাংলার কন্যাদের রক্ষা করতে পারে না সেখানে কন্যাশ্রী মূল্যহীন!’ পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, পরিবারের তরফে এই ধরনের কোনও অভিযোগ করা হয়নি, সমস্ত প্রক্রিয়া মেনে তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে কয়েকদিনের মধ্যেই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে।’’ অনেকে অবশ্য বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির ওই ফেসবুক পোস্টের নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন।