রাজনৈতিক বিবাদ যতই থাক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে সাফল্যের পুরস্কার দিতেই হল নরেন্দ্র মোদীকে।
চলতি বছরে সেরা কাজের জন্য ১০০ দিনের প্রকল্পে শেষ দু’মাসের জন্য অতিরিক্ত ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। এই টাকায় আরও তিন কোটি শ্রম দিবস তৈরি করা যাবে। রাজ্যে কাজ পাওয়া ৫০ লক্ষ পরিবারকে আরও ছ’দিন করে বাড়তি কাজ দিতে পারবে পঞ্চায়েত দফতর। বুধবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন সচিব অমরজিৎ সিন্হার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের দুই কর্তা দিব্যেন্দু সরকার ও এষা সেনগুপ্ত। সেখানেই সুখবর শুনিয়েছেন কেন্দ্রীয় সচিব।
রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাজ করলে তার ফল পাওয়া যায়। ১০০ দিনের কাজে আমাদের সাফল্য এখন মোদীজিই প্রচার করছেন। বাড়তি বরাদ্দ না দিয়ে উপায় ছিল না।’’ পঞ্চায়েত দফতরের খবর, আসন্ন ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ৯০০ কোটি টাকায় ঢেলে কাজ দেওয়া হবে। বিজেপি যখন গ্রামে গ্রামে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অনুন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলবে, তখন মোদী সরকারেরই বাড়তি বরাদ্দে ১০০ দিনের কাজ দেবে সরকার। পঞ্চায়েত মন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, ১০০ দিনের প্রকল্পে আইন অনুযায়ী কাজ চাইলে দিতে বাধ্য সরকার। সেই হিসেবে কাজ দেওয়ার পর ৭৫৩ কোটি টাকা মজুরি এখনও বকেয়া রয়েছে। কেন্দ্রকে সেই টাকাও মেটাতে হবে। ১৫ দিনের বেশি বকেয়া হলে সরকারকে গুণাগার হিসেবে বেকার ভাতা দিতে হয়। কেন্দ্র টাকা না দেওয়ার দায় রাজ্য কেন নেবে— প্রশ্ন তুলেছেন সুব্রতবাবু।
আরও পড়ুন: একশো দিনে আরও ৯০০ কোটি বরাদ্দ করল কেন্দ্র
১০০ দিনের কাজে এ বার অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো রাজ্যকে পিছনে ফেলে দিয়েছে রাজ্য। বুধবার পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, রাজ্যে এ বছর ৪৯.৯৩ লক্ষ পরিবার কাজ পেয়েছে। কাজ করেছেন ৭৪.৪১ লক্ষ মানুষ। বাম জমানায় এই সংখ্যাটা ৪২-৪৫ লক্ষের মধ্যে থাকত। এ বছর পরিবার পিছু কাজ দেওয়া হয়েছে ৫০ দিন। সে জন্য খরচ হয়েছে ৬৫৩৯ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা। কেন্দ্রের কাছে এখনও পাওনা ১০৪৯ কোটি।
এই অবস্থায় রাজ্যের কাজের পরিধি বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। বছরের শুরুতে ২৩ কোটি কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্য থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৬ কোটি করা হয়েছে। পুরস্কারের কথা শুনে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজ্য সাফল্য পেলে ভালই। কিন্তু ১০০ দিনের প্রকল্পে বছরে ৭৫ লক্ষ মানুষ কাজ করলে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, এ রাজ্যে শিল্প বা ব্যবসা কিছুই নেই। কর্মসংস্থান বলতে ১০০ দিনের কাজ। তা হলে আর ঘটা করে শিল্প সম্মেলন করার অর্থ কী?’’