সালেম খান।
আনিস খানের মামলার শুনানিতে তাঁর বাবাকেই ভরা আদালতে ক্ষমা চাইতে বলা হল। বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বললেন, আনিসের বাবাকে হলফনামা দিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে। তা না হলে তিনি নিজে সরে দাঁড়াবেন মামলার বিচারের দায়িত্ব থেকে। কেন না আনিসের বাবা যে আদালতের কাছে বিচার চাইতে এসেছেন, সেই আদালতেরই অবমাননা করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি রাজশখরের একক বেঞ্চে ওইদিনই আনিস হত্যা মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিচারপতি না বসায় মামলাটি পিছিয়ে যায়। ঘটনাটির প্রেক্ষিতে আনিসের বাবা সেলিম খানের একটি মন্তব্য নিয়েই অসন্তোষ জানিয়েছেন বিচারপতি। সালেম মামলা পিছনোর কারণ হিসেবে বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই শুনানি হয়নি। জবাবে বিচারপতি রাজশেখর জানিয়েছেন, ‘‘যদি তাই হয়, যদি ওঁর (আনিসে বাবার) আদালতের উপর আস্থা না-ই থাকে, তবে আমি এই মুহূর্তে এই মামলাটির বিচারের কাজ থেকে সরে আসতে পারি।’’
মঙ্গলবার এই ঘটনায় পরিস্থিতি সামলাতে নামেন আনিসের বাবার আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। বিচারপতিকে মামলা না ছাড়ার অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘‘সালেম এক জন সাধারণ মানুষ। তিনি উচ্চশিক্ষিত নন। কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিও নন তিনি। পুত্রকে হারিয়ে মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তবে আইনের প্রতি তাঁর সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’ যদিও সে কথায় তেমন কাজ হয়নি। বিচারপতি নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। তিনি জানিয়ে দেন, মামলাকারীর মন্তব্য আদালত অবমাননার সামিল।
শেষপর্যন্ত রাজ্যের অ্যাডভোকেট (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি বদলায়। তিনি বিচারপতিকে বলেন, ‘‘মামলাকারী কাছে এমন মন্তব্য আশা করা যায় না ঠিকই। কিন্তু দয়া করে আপনি মামলাটি ছেড়ে দেবেন না।’’ সরকারি আইনজীবী অনুরোধেই এর পর মামলাটি শুনতে রাজি হন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। তবে জানিয়ে দেন, সালেমকে হলফনামা দিয়ে আদালতের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।