প্রতীকী ছবি।
বিভিন্ন ধরনের টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় ২০১৯ সালের মার্কশিটে পশ্চিমবঙ্গের নম্বর ছিল ৭৪ শতাংশ। মাত্র এক বছরে সেটা ১১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৮৫ অর্থাৎ ‘স্টার মার্কস’। রাজ্যের এই সাফল্যের স্বীকৃতি এসেছে কেন্দ্রের কাছ থেকেও।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব তথা রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধিকর্তা বন্দনা গুরনানি বুধবার রাজ্যকে যে-চিঠি পঠিয়েছেন, তাতে ওই সাফল্যের উল্লেখ রয়েছে। বঙ্গের মতো একই ‘স্কোর’ করেছে তামিলনাড়ু। ২০২০-২০২১ বর্ষে একমাত্র এই দু’টি রাজ্যই ‘এক্সেলেন্ট’ ক্যাটেগরিতে রয়েছে। তবে ২০১৯-এর তুলনায় তামিলনাড়ুর স্কোর বেড়েছে মাত্র চার শতাংশ। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানান, শুধু করোনার টিকা নয়, যে-কোনও প্রতিষেধক দেওয়ার পরে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া চিহ্নিতকরণ এবং তার ব্যবস্থাপনায় জোর দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র ‘ফার্মাকো ভিজিল্যান্স’-এর শীর্ষ কর্তা রাজ্যে এসে ‘পেন্টাভালেন্ট ভ্যাকসিন’-এর ‘অ্যাডভার্স এফেক্ট ফলোয়িং ইমিউনাইজেশন’ (এএফএআই) বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার কাজ পর্যবেক্ষণ করে প্রশংসা করেছিলেন।
স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর, গত এক বছর ধরে অতিমারির কারণে দেশ জুড়ে বিভিন্ন টিকাকরণ কর্মসূচি ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি ‘এএফএআই’-এর উপরেও বিশেষ নজর ছিল না অনেক রাজ্যের। পশ্চিমবঙ্গ সেখানে নিজেদের দক্ষতা বাড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছে বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি। কর্নাটক, বিহার, মহারাষ্ট্রের স্কোর ২০১৯-এর থেকেও কমে গিয়েছে। সামগ্রিক হিসেবে ৮৯ শতাংশ স্কোর করে সবার প্রথমে রয়েছে চণ্ডীগড়। অজয়বাবু বলেন, ‘‘চণ্ডীগড় ছোট রাজ্য। তার তুলনায় বড় রাজ্যগুলির বিচারে বঙ্গ প্রথম। আশা ও স্বাস্থ্য কর্মীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষণ এবং সর্বোপরি দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার জন্যই এই সাফল্য মিলিছে।’’ সম্প্রতি প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষতাতেই রাজ্য সরকার কয়েক লক্ষ ডোজ় প্রতিষেধক বাঁচাতে পেরেছিল।
স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানান, প্রতিষেধকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যবস্থাপনার জন্য ব্লক, জেলা ও রাজ্য স্তরে আলাদা কমিটি রয়েছে। প্রথমে ব্লক স্তরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া চিহ্নিত করে দ্রুত তথ্য পাঠাতে হয় জেলাকে। তার পরে জেলা স্তর থেকে সংশ্লিষ্ট পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সবিস্তার রিপোর্ট তৈরি করে পাঠানো হয় রাজ্যে। এর পরে রাজ্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি সেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রকৃত কারণ খুঁজে বার করেন। পুরো কাজটি অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে করার জন্য সুদক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীর প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন অজয়বাবু।
একই ভাবে কড়া নিয়ন্ত্রণ বিধি চালু করায় রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হারও নিম্নমুখী হয়েছে বলে সরকারি অফিসারদের দাবি। এ দিন রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩০১৮। মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের।