প্রতীকী ছবি।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বেশ কিছু জায়গায় এই গরমে জলকষ্ট দেখা দিয়েছে। হরিরামপুরের পাটনিপাড়া তার অন্যতম। শুক্রবার দুপুরে সেখানে গভীর নলকূপ বা সাব মার্সিবল পাম্প থেকে পানীয় জল নেওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারিতে বেঘোরে প্রাণ গেল এক জনের। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’পক্ষের মারামারি থামাতে যাওয়াই কাল হল এলাকার বাসিন্দা গিরিন দাসের (৬৫)। তাঁর বৌমা চন্দনাদেবী এবং আর এক আত্মীয় সুব্রত দাস গুরুতর জখম হন। তাঁরা হরিরামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি।
এ বারের গ্রীষ্মে গোটা দেশে জলসঙ্কট বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। টানা গরম চলছে দক্ষিণ দিনাজপুরেও। পশ্চিমবঙ্গের এই প্রান্তিক জেলাতেও তাই গভীর জলসঙ্কট এখন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গিরিনবাবুদের প্রতিবেশী পঙ্কজ দাস, দীপঙ্কর দাসদের জমিতে সেচের জন্য গভীর নলকূপ বসানো রয়েছে। ওই পরিবারের দাবি, সেখান থেকে নিত্য হাঁড়ি, বালতি এনে জল ভরে নিয়ে যান গিরীনের বাড়ির লোকেরা। এ দিনও গিরিনের কিশোরী নাতনি রিয়া গিয়েছিল জল ভরতে। তার অভিযোগ, পঙ্কজ, দীপঙ্কর এবং তাঁদের পরিবারে বাকি লোকেরা মিলে তাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেন।
চন্দনাদেবী জানান, মেয়ের কথা শুনে এর পরে তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। সঙ্গে ছিলেন আর এক আত্মীয় সুব্রত। দু’জনকেই বাঁশ পেটা করা হয় বলে অভিযোগ। তাতে চন্দনার মাথা ফাটে বলে দাবি। চেঁচামেচি শুনে গিরিনবাবু যান বৌমাকে বাঁচাতে। চন্দনাদের দাবি, তাঁর মাথায় বাঁশ দিয়ে মারা হয়। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
অভিযুক্তরা এই দাবি মানতে চায়নি। তাঁদের কথায়, ধাক্কাধাক্কির সময়ে বৃদ্ধ পড়ে যান। তাঁর বেকায়দায় লাগে। তখন তিনি মারা যান। অভিযুক্তদের আরও দাবি, এ ভাবে জল ভরে নিয়ে যাওয়ার জন্য জমিতে জল দেওয়ার কাজে অসুবিধা হত। তাই তাঁরা আপত্তি জানিয়েছিলেন, দাবি তাঁদের।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় অভিযুক্ত ছ’জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিহতের পরিবার। গঙ্গারামপুরের এসডিপিও বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জমিতে সেচের জন্য বসানো ব্যক্তিগত সাব মার্সিবল পাম্প থেকে এলাকার মহিলারা জল সংগ্রহ করেন। জল নেওয়া নিয়ে এলাকার দু’পক্ষ মহিলার মধ্যে গন্ডগোল বাধে। সেই বিবাদ থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে মারা যান গিরিনবাবু। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ হরিরামপুরের বিডিও বাসুদেব সরকার বলেন, ‘‘সাব মার্সিবল পাম্প থেকে জল নেওয়া নিয়ে প্রতিবেশী দু’পক্ষের গন্ডগোলের জেরে ওই ঘটনাটি ঘটে।’’ এলাকায় জলের তেমন অভাব নেই বলে বিডিও দাবি করেন।